পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

|| 8 || পাওয়া শক্তির ক্ষেত্রে যারা কাজ করে তারা অনন্ত উন্নতির কথা বলে। অর্থাৎ, অনন্ত গতির উপরেই তারা জোর দেয়, অনন্ত স্থিতির উপর নয়। তারা অনন্ত চেষ্টার কথাই বলে, অনন্ত লাভের কথা বলে না। এইজন্য ধর্মনীতিই তাদের শেষ সম্বল । নীতি কিনা নিয়ে যাবার জিনিস, তা পথের পাথেয়। যারা পথকেই মানে তারা নীতিকেই চরমরূপে মানে, তারা গৃহের সম্বলের কথা চিন্তা করে না। কারণ, যে গৃহে কোনো কালেই মানুষ পৌছবে না, সে গৃহকে মানলেও হয় না মানলেও হয়। যে উন্নতি অনন্ত উন্নতি তাকে উন্নতি না বললে ক্ষতি হয় না। কিন্তু, শক্তিভক্তেরা বলে চলাটাই আনন্দ, কারণ, তাতে শক্তির চালনা হয় ; লাভে শক্তির কর্ম শেষ হয়ে গিয়ে নিশ্চেষ্ট তামসিকতায় নিয়ে গিয়ে ফেলে : বস্তুত, ঐশ্বর্যপদার্থের গৌরবই এই ষে সে আমাদের কোনে। লাভের মধ্যে এনে ধরে রাখে না, সে আমাদের অগ্রসর করতে থাকে। যত ক্ষণ আমাদের শক্তি থাকে তত ক্ষণ ঐশ্বৰ্ষ আমাদের থামতে দেয় না ; কিন্তু, ছৰ্গতির পূর্বে দেখতে পাই মাহষ বলতে থাকে, “এইটেই আমি চেয়েছিলুম এবং এইটেই আমি পেয়েছি। তখন পথিকধর্ম সে বিসর্জন দিয়ে সঞ্চয়ার ধর্ম গ্রহণ করতে থাকে ; তখন সে আর সম্মুখের দিকে তাকায় না, যা পেয়েছে সেইটেকে কী করলে আটেঘাটে বাধা যায়, রক্ষা করা যায়, সেই কথাই সে ভাবতে থাকে।