পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

为及8 শাস্তিনিকেতন কিন্তু, সংসার জিনিসটা যে কেবলই সরে, কেবলই সরায় । এখানে হয় সরতে থাকো নয় মরতে থাকে। এখানে যে বলেছে ‘আমার যথেষ্ট হয়েছে, এইবার যথেষ্টের মধ্যে বাসা বাধব', সেই ডুবেছে । ইতিহাসে বড়ো বড়ো জাতির মধ্যেও দেখতে পাই যে, তারা এক জায়গায় এসে বলে, “এইবার আমার পূর্ণত হয়েছে ; এইবার আমি সঞ্চয় করব, রক্ষা করব, বাধাবাধি হিসাব বরাদ করব, এইবার আমি ভোগ করব। তখন আর সে নূতন তত্ত্বকে বিশ্বাস করে না ; তখন তার এত দিনের পথের সম্বল ধর্মনীতিকে দুর্বলতা বলে উপহাস ও অপমান করতে থাকে, মনে করে, “এখন আর এর প্রয়োজন নেই— এখন আমি বলী, আমি জয়ী, আমি প্রতিষ্ঠিত।’ কিন্তু, প্রবাহের উপরে যে লোক প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করতে চায় তার যে দশা হয় সে কারও অগোচর নেই। তাকে ডুবতেই হয় । এমন কত জাতি ডুবে গেছে। কেবলই উন্নতি, কেবলই গতি, পরিণাম কোথাও নেই, এমন একট। অদ্ভুত কথার উৎপত্তি হয়েছে এই কারণেই। কারণ, মানুষ দেখেছে সংসারে থামতে গেলেই মরতে হয়। এই নিয়মকে যারা উপলব্ধি করেছে তারা স্থিতি ও লাভকে অস্বীকার করে | স্থিতিহীন গতি, লাভহীন চেষ্টাই যদি মানুষের ভাগ্য হয় তবে এমন ভয়ানক দুর্ভাগ্য আর কী হতে পারে! এ কথা ঐশ্বর্যগর্বের উন্মত্ততায় অন্ধ হয়ে বলা চলে, কিন্তু এ কথা আমাদের অন্তরাত্মা কখনোই সম্পূর্ণ সম্মতির সঙ্গে বলতে পারে না। তার কারণ, একটা জায়গায় আমাদের পাওয়ার পন্থা আছে। সে হচ্ছে যেখানে ঈশ্বর স্বয়ং নিজেকে ধরা দিয়েছেন। সেখানে আমরা তাকে পাই, কেননা, তিনি নিজেকে দিতে চান বলেই পাই। কোথায় পাই ? বাহিরে নয়, প্রকৃতিতে নয়, বিজ্ঞানতত্ত্বে নয়,