পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাওয়া > Qの শক্তিতে নয়— পাই জীবাত্মায়। কারণ, সেখানে তার আনন্দ, তার প্রেম। সেখানে তিনি নিজেকে দিতেই চান। যদি কোনো বাধা থাকে তো সে আমাদেরই দিকে, তার দিকে নয়। এই প্রেমে পাওয়ার মধ্যে তামসিকতা নেই, জড়ত্ব নেই। এই-যে লাভ এ চরম লাভ বটে, কিন্তু, পঞ্চতলাভের মতো এতে আমরা বিনষ্ট হই নে। তার কারণ আমরা পূর্বেই একদিন আলোচনা করেছি। শক্তির পাওয়া ব্যাপারে পেলেই শক্তি নিশ্চেষ্ট হয়, কিন্তু, প্রেমের পাওয়ায় পেলে প্রেম নিশ্চেষ্ট হয় না— বরঞ্চ তার চেষ্টা আরও গভীর রূপে জাগ্রত হয়। এইজন্যে এই-যে প্রেমের ক্ষেত্রে ঈশ্বর আমাদের কাছে ধরা দেন, এই ধরা দেওয়ার দরুন তিনি আমাদের কাছে ছোটো হয়ে যান না— র্তার পাওয়ার আনন্দ নিরস্তর প্রবাহিত হয়— সেই পাওয়া নিত্য নূতন থাকে ] মানুষের মধ্যেও যখন আমাদের সত্য প্রেম জাগ্রত হয়ে ওঠে তখন সেই প্রেমের বিষয়কে লাভ করেও লাভের অস্ত থাকে না – এমন স্থলে ব্রহ্মের কথা কী বলব ? সেই কথায় উপনিষৎ বলেছেন— আনন্দং ব্রহ্মণে বিদ্বান ন বিভেতি কদাচন। ব্রহ্মের আনন্দ, ব্রহ্মের প্রেম, যিনি জেনেছেন তিনি কোনো কালেই আর ভয় পান না । অতএব, মানুষের একটা এমন পাওয়া আছে যার সম্বন্ধে চিরকালের কথাটা প্রয়োগ করা যেতে পারে। ভারতবর্ষ এই পাওয়ার দিকেই খুব করে মন দিয়েছিলেন। সেইজন্যেই ভারতবর্ষের হৃদয় মৈত্রেয়ীর মুখ দিয়ে বলেছেন : যেনাহং নামৃত স্তাম্ কিমহং তেন কুর্যাম ? সেইজন্যে মৃত্যুর দিক থেকে অমৃতের দিকে ভারতবর্ষ আপনার আকাঙ্ক্ষা প্রেরণ করেছিলেন।