পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

劇 Svంశి l শান্তিনিকেতন

সংসারের কর্মে রত তার অন্ধকারে পড়ে, আর যারা বিদ্যায় অর্থাৎ কেবল ব্ৰহ্মজ্ঞানে রত তারা ততোধিক অন্ধকারে পড়ে । এই সমস্যার মীমাংসাস্বরূপ বলেছেন, কর্ম এবং ব্ৰহ্মজ্ঞান উভয়েরই প্রয়োজন আছে— অবিদ্যয়া মৃত্যুং তীর্ত বিদ্যয়ামৃতমশ্ন তে। কর্মের দ্বারা মৃত্যু উত্তীর্ণ হয়ে বিদ্যা দ্বারা জীব অমৃত লাভ করে। ব্ৰহ্মহীন কর্ম অন্ধকার এবং কর্মহীন ব্রহ্ম ততোধিক শূন্যতা। কারণ, তাকে নাস্তিকতা বললেও হয়। যে আনন্দস্বরূপ ব্ৰহ্ম হতে সমস্ত-কিছুই হচ্ছে সেই ব্রহ্মকে এই-সমস্ত-কিছু-বিবর্জিত করে দেখলে সমস্তকে ত্যাগ করা হয়, সেইসঙ্গে তাকেও ত্যাগ করা হয় । যাই হোক, আনন্দের ধর্ম যদি কর্ম হয় তবে কর্মের দ্বারাই সেই আনন্দস্বরূপ ব্রহ্মের সঙ্গে আমাদের যোগ হতে পারে । গীতায় একেই বলে কর্মযোগ । কর্মযোগের একটি লৌকিক রূপ পৃথিবীতে আমরা দেখেছি। সে হচ্ছে পতিব্ৰতা স্ত্রীর সংসারযাত্রা। সতী স্ত্রীর সমস্ত সংসারকর্মের মূলে । আছে স্বামীর প্রতি প্রেম, স্বামীর প্রতি আনন্দ । এইজন্য, সংসারকর্মকে তিনি স্বামীর কর্ম জেনেই আনন্দ বোধ করেন— কোনো ক্রীতদাসীও র্তার মতো এমন করে কাজ করতে পারে না । এই কাজ যদি একান্ত র্তার নিজের প্রয়োজনের কাজ হত তা হলে এর ভার বহন করা তার পক্ষে দুঃসাধ্য হত। কিন্তু, এই সংসারকর্ম র্তার পক্ষে কর্মযোগ। এই কর্মের দ্বারাই তিনি স্বামীর সঙ্গে বিচিত্রভাবে মিলিত হচ্ছেন । আমাদের কর্মক্ষেত্র এই কর্মযোগের যদি তপোবন হয় তবে কর্ম আমাদের পক্ষে বন্ধন হয় না। তা হলে, সতী স্ত্রী যেমন কর্মের দ্বারাই কর্মকে উত্তীর্ণ হয়ে প্রেমকে লাভ করেন, আমরাও তেমনি কর্মের