পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S\O8 শাস্তিনিকেতন ফাকি দেব সেখানে আমরা নিজেকেই ফাকি দেব। যদি মনে করি দ্বারীকে ডিঙিয়ে রাজার সঙ্গে দেখা করব, তা হলে দেউড়িতে এমনি আমাদের লাঞ্ছনা হবে যে রাজদর্শনই দুঃসাধ্য হয়ে উঠবে। যদি মনে করি নিয়মকে বর্জন করে নিয়মের উর্ধের্ব উঠব, তা হলে কুপিত নিয়মের হাতে আমাদের দুঃখের একশেষ হবে। বিধানকে সম্পূর্ণ স্বীকার করে তবেই বিধানের মধ্যে আমাদের কর্তৃত্ব জন্মে। গৃহের ষে কর্তা হতে চায় গৃহের সমস্ত নিয়ম সংযম তাকেই সকলের চেয়ে বেশি মানতে হয়— সেই স্বীকারের দ্বারাই সেই কর্তৃত্বের অধিকার লাভ করে। এই কারণেই বলছিলুম, সংসারের মধ্যে থেকেই আমরা সংসারের উর্ধের্ব উঠতে পারি, কর্মের মধ্যে থেকেই আমরা কর্মের চেয়ে বড়ো হতে পারি। পরিত্যাগ ক’রে, পলায়ন ক’রে কোনোমতেই তা সম্ভব হয় না । কারণ, আমাদের যে মুক্তি সে স্বভাবের দ্বারা হলেই সত্য হয়, অভাবের দ্বারা হলে হয় না। পূর্ণতার দ্বারা হলেই তবে সে সার্থক হয়, শূন্যতার দ্বারা সে শূন্য ফলই লাভ করে। অতএব, যিনি মুক্তস্বরূপ সেই ব্রহ্মের দিকে লক্ষ করে। তিনি না-রূপেই মুক্ত নন, তিনি ই-রূপেই মুক্ত। তিনি ওঁ ; অর্থাৎ তিনি ই। এইজন্য ব্রহ্মর্ষি তাকে নিক্রিয় বলেন নি, অত্যন্ত স্পষ্ট করেই তাকে সক্রিয় বলেছেন । র্তারা বলেছেন— পরাস্ত শক্তিবিবিধৈব শ্রীয়তে স্বাভাবিকী জ্ঞানবলক্রিয় চ। _ শুনেছি এর পরম শক্তি এবং এর বিবিধা শক্তি এবং এর জ্ঞানক্রিয়া ও বলক্রিয়া স্বাভাবিকী । ব্রহ্মের পক্ষে ক্রিয়া হচ্ছে স্বাভাবিক, অর্থাৎ তার স্বভাবেই সেই ক্রিয়ার মূল, বাইরে নয়। তিনি করছেন, তাকে কেউ করাচ্ছে না।