পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগতে মুক্তি }\లి) তখন দ্বৈতবাদী ভারত জগৎ এবং জগতের মূলে দুইটি তত্ত্ব স্বীকার করলেন । প্রকৃতি ও পুরুষ। অর্থাৎ, ব্রহ্মকে তারা নিক্রিয় নিৰ্বগুণ বলে এক পাশে সরিয়ে রেখে দিলেন এবং শক্তিকে জগৎক্রিয়ার মূলে যেন স্বতন্ত্র সত্তারূপে স্বীকার করলেন । এইরূপে ব্ৰহ্ম যে কর্ম দ্বারা বদ্ধ নন এ কথাও বললেন, অথচ কর্ম যে একেবারে কিছুই নয় তাও বলা হল না। শক্তি ও শক্তির কার্য থেকে শক্তিমানকে দূরে বসিয়ে তাকে একটা খুব বড়ো পদ দিয়ে তার সঙ্গে সমস্ত সম্বন্ধ একেবারে পরিত্যাগ করলেন । শুধু তাই নয়, এই ব্রহ্মই যে পরাস্ত, তিনিই যে ছোটো, সে কথাও নানা রূপকের দ্বারা প্রচার করতে লাগলেন । এমনটি যে ঘটল তার মূলে একটি সত্য আছে। মুক্তির মধ্যে একই কালে একটি নিৰ্বগুণ দিক এবং একটি সগুণ দিক দেখা যায়। তারা একত্র বিরাজিত । আমরা সেটা আমাদের নিজের মধ্য থেকেই বুঝতে পারি। সেই কথাটার আলোচনা করবার চেষ্ট৷ করা যাক । একদিন জগতের মধ্যে একটি অখণ্ড নিয়মকে আমরা আবিষ্কার করি নি। তখন মনে হয়েছে, জগতে কোনো-এক বা অনেক শক্তির কৃপা আছে, কিন্তু বিধান নেই। যখন-তখন যা খুশি তাই হতে পারে। অর্থাৎ, যা-কিছু হচ্ছে তা এমনি একতরফা হচ্ছে যে আমার দিক থেকে তার দিকে যে যাব এমন রাস্তা বন্ধ ; সমস্ত রাস্তাই হচ্ছে তার দিক । থেকে আমার দিকে, আমার পক্ষে কেবল ভিক্ষার রাস্তাটি খোলা । এমন অবস্থায় মানুষকে কেবলই সকলের হাতে পায়ে ধরে বেড়াতে হয়। আগুনকে বলতে হয় ‘তুমি দয়া করে জলো, বাতাসকে বলতে হয় তুমি দয়া করে বও, স্বৰ্ষকে বলতে হয় তুমি যদি কৃপা করে ন৷ উদয় হও তবে আমার রাত্রি দূর হবে না’। ि