পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জগতে মুক্তি S83 তার যোগ আছে, যা তার আপনারই । তার নিজের ষে আলোক, সর্বত্রই সেই আলোক। এমন-কি, সর্বত্রই সেই আলোক অখগুরূপে ন৷ থাকলে সে নিজেই বা কোথায় থাকত ! এতদিনে জ্ঞান মুক্তি পেলে । সে আর তো বাধা পেল না। সে বলল, “আঃ বাচা গেল, এ যে আমাদেরই বাড়ি, এ যে আমার পিতৃভবন। আর তো আমাকে সংকুচিত হয়ে, অপমানিত হয়ে থাকতে হবে না। এতদিন স্বপ্ন দেখছিলুম যেন কোন পাগলাগারদে আছি। আজ স্বপ্ন ভেঙেই দেখি, শিয়রের কাছে পিতা বসে আছেন, সমস্তই আমার আপনার ।” এই তো হল জ্ঞানের মুক্তি। বাইরের কিছু থেকে নয়, নিজেরই কল্পনা থেকে । 嚼 কিন্তু, এই মুক্তির মধ্যেই জ্ঞান চুপচাপ বসে থাকে না। তার মন্ত্রতন্ত্র তাগা-তাবিজের শিকল ছিন্নভিন্ন করে এই মুক্তির ক্ষেত্রে তার শক্তিকে প্রয়োগ করে। I যখন আমরা আত্মীয়ের পরিচয় পাই তখন সেই পরিচয়ের উপরেই তো চুপচাপ করে বসে থাকতে পারি নে, তখন আত্মীয়ের সঙ্গে আত্মীয়তার আদানপ্রদান করবার জন্য উদ্যত হয়ে উঠি । জ্ঞান যখন জগতে জ্ঞানের পরিচয় পায়, তখন তার সঙ্গে কাজে যোগ দিতে প্রবৃত্ত হয়। তখন পূর্বের চেয়ে তার কাজ ঢের বেড়ে যায়, কারণ, মুক্তির ক্ষেত্রে শক্তির অধিকার বহুবিস্তৃত হয়ে পড়ে। তখন জ্ঞানের সঙ্গে জ্ঞানের যোগে জাগ্রত শক্তি বহুধা হয়ে প্রসারিত হতে থাকে । তবেই দেখা যাচ্ছে, জ্ঞান বিশ্বজ্ঞানের মধ্যে আপনাকে উপলব্ধি ক’রে আর চুপ করে থাকতে পারে না। তখন শক্তিযোগে কর্ম দ্বারা নিজেকে সার্থক করতে থাকে। o