পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>8○ সমাজে মুক্তি মানুষের কাছে কেবল জগৎপ্রকৃতি নয়, সমাজপ্রকৃতি বলে আর-একটি আশ্রয় আছে। এই সমাজের সঙ্গে মানুষের কোন সম্বন্ধটা সত্য সে কথা ভাবতে হয়। কারণ, সেই সত্য সম্বন্ধেই মানুষ সমাজে মুক্তিলাভ করে, মিথ্যাকে সে যতখানি আসন দেয় ততখানিই বদ্ধ হয়ে থাকে । আমরা অনেক সময় বলেছি ও মনে করেছি, প্রয়োজনের তাগিদেই মানুষ সমাজে বদ্ধ হয়েছে। আমরা একত্রে দল বাধলে বিস্তর স্ববিধা আছে । রাজা আমার বিচার করে, পুলিস আমার পাহারা দেয়, পৌরপরিষৎ আমার রাস্তা বাট দিয়ে যায়, ম্যাঞ্চেস্টার আমার কাপড় জোগায় এবং জ্ঞানলাভ প্রভৃতি আরও বড়ো বড়ো উদ্দেশ্যও এই উপায়ে সহজ হয়ে আসে। অতএব, মানুষের সমাজ সমাজস্থ প্রত্যেকের স্বার্থসাধনের প্রকৃষ্ট উপায়। এই প্রয়োজনের তাগিদেই মানুষ সমাজে আবদ্ধ হয়েছে এই কথাকেই অস্তরের সঙ্গে যদি সত্য বলে জানি, তা হলে সমাজকে মানবহৃদয়ের কারাগার বলতে হয়। সমাজকে একটা প্রকাও এঞ্জিনওয়াল কারখানা বলে মানতে হয় ; ক্ষুধানলদীপ্ত প্রয়োজনই সেই কলের কয়লা জোগাচ্ছে। যে হতভাগ্য এইরকম অত্যন্ত প্রয়োজনওয়ালা হয়ে সংসারের খাটুনি খেটে মরে সে তো কৃপাপাত্র সন্দেহ নেই। ংসারের এই বন্দীশাল-মূর্তি দেখেই তো সন্ন্যাসী বিদ্রোহ করে ওঠে । সে বলে, ‘প্রয়োজনের তাড়ায় আমি সমাজের হরিণবাড়িতে পাথর ভেঙে মরব ? কোনোমতেই না। জানি আমি প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বড়ো। ম্যাঞ্চেস্টার আমার কাপড় জোগাবে ? দরকার কী ? আমি কাপড় ফেলে দিয়ে বনে চলে যাব। বাণিজ্যের জাহাজ দেশবিদেশ থেকে