পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 88 শাস্তিনিকেতন আমার খাদ্য এনে দেবে ? দরকার নেই, আমি বনে গিয়ে ফল মূল খেয়ে থাকব ।’ কিন্তু, বনে গেলেও যখন প্রয়োজন আমার পিছনে পিছনে নানা আকারে তাড়া করে তখন এত বড়ো স্পর্ধ আমাদের মুখে সম্পূর্ণ শোভা পায় না । তবে সংসারের মধ্যে আমাদের মুক্তি কোনখানে ? প্রেমে। যখনই জানব প্রয়োজনই মানবসমাজের মূলগত নয়, প্রেমই এর নিগূঢ় এবং চরম আশ্রয়, তখনই এক মুহূর্তে আমরা বন্ধনমুক্ত হয়ে যাব। তখনই বলে উঠব, ‘প্রেম আঃ ! বাচা গেল। তবে আর কথা নেই। কেননা, প্রেম যে আমারই জিনিস। এ তো আমাকে বাহির থেকে তাড়া লাগিয়ে বাধ্য করে না। প্রেমই যদি মানবসমাজের তত্ত্ব হয় তবে সে তো আমারই তত্ত্ব। অতএব, প্রেমের দ্বারা মুহূর্তেই আমি প্রয়োজনের সংসার থেকে মুক্ত আনন্দের সংসারে উত্তীর্ণ হলুম। — যেন পলকে স্বপ্ন ভেঙে গেল । এই তো গেল মুক্তি। তার পরে ? তার পরে অধীনতা । প্রেম মুক্তি পাবামাত্রই সেই মুক্তিক্ষেত্রে আপনার শক্তিকে চরিতার্থ করবার জন্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন তার কাজ পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে ওঠে। তখন সে পৃথিবীর দীন দরিদ্রেরও দাস, তখন সে মূঢ় অধমেরও সেবক। এই হচ্ছে মুক্তির পরিণাম । যে মুক্ত তার তো ওজর নেই। সে তো বলতে পারবে না, ‘আমার আপিস আছে, আমার মনিব আছে, বাইরে থেকে তাড়া আছে।’ কাজেই যেখান থেকেই ভাক পড়ে তার অার না’ বলবার জো নেই। মুক্তির এত বড়ো দায়। আনন্দের দায়ের মতো দায় আর কোথায় আছে ? : է: যদি বলি মানুষ মুক্তি চায়, তবে মিথ্যা কথা বলা হয়। মানুষ মুক্তির