পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নির্বিশেষ 3 & X সেই অামিকে নিয়ে সকল দুষ্কর্ম করতেই পারে। মানুষের ধর্মবোধ তাকে নিয়তই শিক্ষা দিচ্ছে, তোমার আমিই একান্ত নয়। তোমার আমিকে সমাজ-আমির মধ্যে মুক্তি দাও। অর্থাৎ, তোমার বিশেষত্বকে অতিবিশেষের অভিমুখে নিয়ে চলে।’ এই অতিবিশেষের অভিমুখে যদি বিশেষত্বকে না নিয়ে যাই তা হলে সংসার নিদারুণ বিশিষ্ট মূর্তি ধারণ করে আমাদের ঘাড়ের উপর চেপে বসে, তার সমস্ত পদার্থই একান্ত বোঝা হয়ে ওঠে। টাকা তখন অত্যন্ত একান্ত হয়ে উঠে অ-টাকাকে এমনি বিরুদ্ধ করে তোলে যে, টাকার বোঝা কিছুতেই আর আমরা নামাতে পারি নে। f এই বন্ধন এই বোঝা থেকে মুক্তি দেবার জন্যে মানুষের মধ্যে বড়ো বড়ো ভাব, মঙ্গলভাব, ধর্মভাব কত রকম করে কাজ করছে। বড়োর মধ্যে ছোটোর বিশেষত্বগুলি নিজের ঐকাস্তিকতা ত্যাগ করে ; এইজন্তে বড়োর মধ্যে বিশেষের দৌরাত্ম্য কম পড়াতে মানুষ বড়ে ভাবের আনন্দে ছোটোর বন্ধন, টাকার বন্ধন, খ্যাতির বন্ধন ত্যাগ করতে পারে। তাই দেখা যাচ্ছে, নির্বিশেষের অভিমুখেই মানুষের সমস্ত উচ্চ আকাজক্ষা সমস্ত উন্নতির চেষ্টা কাজ করছে। অদ্বৈতবাদ, মায়াবাদ, বৈরাগ্যবাদ মামুষের এই ভাবকে এই সত্যকে সমুজ্জল করে দেখেছে। সুতরাং, মানুষকে অদ্বৈতবাদ একটা বৃহৎ সম্পদ দান করেছে। তার মধ্যে নানা অব্যক্ত অর্ধব্যক্তভাবে ষে সত্য কাজ করছিল, সমস্ত আবরণ সরিয়ে দিয়ে তারই সম্পূর্ণ পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু, যেখানেই হোক, বিশিষ্টতা বলে একটা পদার্থ এসেছে। মিথ্যাই বলি, মায়াই বলি, তার মস্ত একটা জোর— সে আছে। এই জোর সে পায় কোথা থেকে ? ኻ ব্ৰহ্ম ছাড়া আর-কোনো শক্তি (তাকে শয়তান বল বা আর-কোনে।