পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বব্যাপী Ꮌ © Ꮔr ঈশ্বর সর্বত্র আছেন এ কথাটা আমাদের কাছে অত্যন্ত অভ্যন্ত হয়ে গেছে। এইজন্ত এই মন্ত্র আমাদের কাছে অনাবশ্বক ঠেকে। অর্থাৎ, এই মন্ত্রে আমাদের মনের মধ্যে কোনো চিন্তা জাগ্রত হয় না। অথচ এ কথাও সত্য যে ঈশ্বরের সর্বব্যাপিত্ব সম্বন্ধে আমরা যতই নিশ্চিস্ত হয়ে থাকি না কেন, ‘তস্মৈ দেবায় নমোনমঃ’ এ আমাদের অভিজ্ঞতার কথা নয় ; আমরা সেই দেবতাকে নমস্কার করতে পারি নে। ঈশ্বর সর্বব্যাপী এ আমাদের শোনা কথা মাত্র। শোনা কথা পুরাতন হয়ে যায়, মৃত হয়ে যায়। এ কথাও আমাদের পক্ষে মৃত । কিন্তু, এ কথা যারা কানে শুনে বলেন নি— যারা মন্ত্রভ্রষ্ট, মন্ত্রটিকে যারা দেখেছেন তবে বলতে পেরেছেন— তাদের সেই প্রত্যক্ষ উপলব্ধির বাণীকে অন্যমনস্ক হয়ে শুনলে চলে না। এ বাক্য যে কতখানি সত্য তা আমরা যেন সম্পূর্ণ সচেতনভাবে গ্রহণ করি। ষে জিনিসকে আমরা সর্বদাই ব্যবহার করি, যাতে আমাদের প্রয়োজনসাধন হয়, আমাদের কাছে তার তাৎপর্য অত্যন্ত সংকীর্ণ হয়ে যায় । স্বার্থ জিনিসটা যে কেবল নিজে ক্ষুদ্র তা নয়, যার প্রতি সে হস্তক্ষেপ করে তাকেও ক্ষুদ্র করে তোলে। এমন-কি, যে মানুষকে আমরা বিশেষভাবে প্রয়োজনে লাগাই সে আমাদের কাছে তার মানবত্ব পরিহার করে বিশেষ যন্ত্রের শামিল হয়ে ওঠে । কেরানি তার অাপিসের মনিবের কাছে প্রধানত যন্ত্র, রাজার কাছে সৈন্তের যন্ত্র, যে চাষা আমাদের অন্নের সংস্থান করে দেয় সে সজীব লাঙল বললেই হয়। কোনো দেশের অধিপতি যদি এ কথা অত্যন্ত করে জানেন যে সেই দেশ থেকে তাদের নানাপ্রকার সুবিধা ঘটছে, তবে সেই দেশকে তার স্থবিধার কঠিন জড় আবরণে বেষ্টিত করে দেখেন— প্রয়োজন-সম্বন্ধের অতীত যে চিত্ত তাকে র্তারা দেখতে পারেন না । জগৎকে আমরা অত্যন্ত ব্যবহারের সামগ্রী করে তুলেছি। এইজন্ত