পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

› ዓ e o শান্তিনিকেতন আজ একত্র সমাগত হয়েছে সেই ভারতবর্ষেই বহুপূর্ব যুগে এই বিচিত্র অতিথিদের এক সভায় বসাবার জন্যে আয়োজন হয়ে গেছে । মানবসভ্যতা যখন দেশে দেশে নব নব বিকাশের শাখা প্রশাখায় ব্যাপ্ত হতে চলেছিল তখন এই ভারতবর্ষ বারম্বার মন্ত্র জপ করছিলেন : এক ! এক ! এক ! তিনি বলছিলেন : ইহ চেৎ আবেদীৎ অথ সত্যমস্তি। এই এককেই যদি মানুষ জানে তবে সে সত্য হয়। ন চেৎ ইহ আবেদীৎ মহতী বিনষ্টি: । এই এককে যদি না জানে তবে তার মহতী বিনষ্টি । এ পর্যন্ত পৃথিবীতে যত মিথ্যার প্রাচুর্ভাব হয়েছে সে কেবল এই মহান একের উপলব্ধি-অভাবে। যত ক্ষুদ্রতা নিস্ফলতা দৌর্বল্য সে এই একের থেকে বিচু্যতিতে। যত মহাপুরুষের আবির্ভাব সে এই এককে প্রচার করতে। যত মহাবিপ্লবের আগমন সে এই এককে উদ্ধার করবার জন্যে। যখন ঘোরতর বিভাগ বিরোধ বিক্ষিপ্ততার দুদিনের মধ্যে কোথায় এই বাংলাদেশে অপ্রত্যাশিত অভাবনীয় রূপে এই বিশ্বব্যাপী একের মন্ত্র ‘একমেবাদ্বিতীয়ম দ্বিধাবিহীন সুস্পষ্ট স্বরে উচ্চারিত হয়ে উঠল তখন এ কথা নিশ্চয় জানতে হবে, সমস্ত মানবচিত্তে কোথা হতে একটি নিগৃঢ় জাগরণের বেগ সঞ্চারিত হয়েছে, এই বাংলাদেশে তার প্রথম সংবাদ ধ্বনিত হয়ে উঠেছে। আমাদের দেশে আজ বিরাট মানবের আগমন হয়েছে। এখানে আমাদের রাজ্য নেই, বাণিজ্য নেই, গৌরব নেই, পৃথিবীতে আমরা সকলের চেয়ে মাথা নিচু করে রয়েছি— আমাদেরই এই দরিদ্র ঘরের অপমানিত শূন্যতার মাঝখানে বিরাট মানবের অভু্যদয় হয়েছে। তিনি আজ আমাদেরই কাছে কর গ্রহণ করবেন বলে এসেছেন। সকল মাহুষের কাছে নিত্যকালের ডালায় সাজিয়ে ধরতে পারি এমন কোনে। রাজদুলভ অৰ্ঘ্য আমাদের এখানে সংগ্রহ হয়েছে, নইলে আমাদের এ সৌভাগ্য হত না। আমাদের এই উৎসর্গ বটের তলায় নয়, ঘরের ।