পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবযুগের উৎসব › ግ > দালানে নয়, গ্রামের মণ্ডপে নয়, এ উৎসর্গ বিশ্বের প্রাঙ্গণে । এইখানেই র্তার প্রাপ্য নেবেন বলে বিশ্বমানব তার দূতকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ; তিনি আমাদের মন্ত্র দিয়ে গিয়েছেন : একমেবাদ্বিতীয়ম্। বলে গিয়েছেন, ‘মনে রাখিস, সকল বৈচিত্র্যের মধ্যে মনে রাথিস অদ্বিতীয় এক। সকল বিরোধের মধ্যে ধরে রাথিস অদ্বিতীয় এক।” সেই মন্ত্রের পর থেকেই আর তো আমাদের নিদ্রা নেই দেখছি । ‘এক আমাদের স্পর্শ করেছেন, আর আমরা স্বস্থির থাকতে পারছি নে। আজ আমরা ঘর ছেড়ে, দল ছেড়ে, গ্রাম ছেড়ে, বিশ্বপথের পথিক হব বলে চঞ্চল হয়ে উঠেছি। এ পথের পাথেয় আছে বলে জানতুম না ; এখন দেখছি অভাব নেই। ঘরে বাহিরে অনৈক্যের দ্বারা যারা নিত্যস্ত বিচ্ছিন্ন, সমস্ত মানুষের মধ্যে তারাই এককে প্রচার করবার হুকুম পেয়েছে। এক জায়গায় সম্বল আছে বলেই এমন হুকুম এসে পৌছল। তার পর থেকে আনাগোনা তো চলেইছে ; একে একে দূত আসছে। এই দেশে এমন একটি বাণী তৈরি হচ্ছে যা পূর্বপশ্চিমকে এক দিব্যধামে আহবান করবে, যা একের আলোকে অমৃতের পুত্রগণকে অমৃতের পরিচয়ে মিলিত করবে। রামমোহন রায়ের আগমনের পর থেকে আমাদের দেশের চিস্তা বাক্য ও কর্ম, সম্পূর্ণ না জেনেও, একটি চিরস্তনের অভিমুখে চলেছে । আমরা কোনো-একটি জায়গায় নিত্যকে লাভ করব এবং প্রকাশ করব, এমন একটি গভীর আবেগ আমাদের অস্তরের মধ্যে জোয়ারের প্রথম টানের মতো স্ফীত হয়ে উঠছে। আমরা অনুভব করছি, সমাজের সঙ্গে সমাজ, বিজ্ঞানের সঙ্গে বিজ্ঞান, ধর্মের সঙ্গে ধর্ম, যে এক পরমতীর্থে, এক সাগরসংগমে, পুণ্যস্নান করতে পারে তারই রহস্য আমরা আবিষ্কার করব। সেই কাজ যেন ভিতরে ভিতরে আরম্ভ হয়ে গেছে ; আমাদের দেশে পৃথিবীর যে-একটি প্রাচীন গুরুকুল ছিল সেই গুরুকুলের দ্বার আবার ষেন এখনই খুলবে