পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૩૧૨ শান্তিনিকেতন এমনি আমাদের মনে হচ্ছে। কেননা, কিছুকাল পূর্বে যেখানে একেবারে নি:শব্দ ছিল এখন যে সেখানে কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে। আর, ওই-ষে দেখছি বাতায়নে এক-একজন মাঝে মাঝে এসে দাড়াচ্ছেন, তাদের মুখ দেখে চেনা যাচ্ছে তারা মুক্ত পৃথিবীর লোক, তারা নিখিল মানবের আত্মীয়। পৃথিবীতে কালে কালে যে-সকল মহাপুরুষ ভিন্ন ভিন্ন দেশে আগমন করেছেন সেই যাজ্ঞবল্ক্য বিশ্বামিত্র বুদ্ধ খৃস্ট মহম্মদ সকলকেই তারা ব্রহ্মের ব’লে চিনেছেন ; তারা মৃত বাক্য মৃত আচারের গোরস্থানে প্রাচীর তুলে বাস করেন না ; তাদের বাক্য প্রতিধ্বনি নয়, কার্য অনুকরণ নয়, গতি অনুবৃত্তি নয় ; তারা মানবাত্মার মাহাত্ম্যসংগীতকে এখনই বিশ্বলোকের রাজপথে ধ্বনিত করে তুলবেন। সেই মহাসংগীতের মূল ধুয়াটি আমাদের গুরু ধরিয়ে দিয়ে গেছেন : একমেবাদ্বিতীয়ম। সকল বিচিত্র তানকেই এই ধুয়াতেই বারম্বার ফিরিয়ে আনতে হবে : একমেবাদ্বিতীয়ম্। আর আমাদের লুকিয়ে থাকবার জো নেই। এবার আমাদের প্রকাশিত হতে হবে, ব্রহ্মের আলোকে সকলের সামনে প্রকাশিত হতে হবে। বিশ্ববিধাতার নিকট থেকে পরিচয়পত্র নিয়ে সমুদয় মানুষের কাছে এসে দাড়াতে হবে। সেই পরিচয়পত্রটি তিনি তার দূতকে দিয়ে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন । কোন পরিচয় আমাদের ? আমাদের পরিচয় এই যে, আমরা তারা যারা বলে না যে ঈশ্বর বিশেষ স্থানে বিশেষ স্বর্গে প্রতিষ্ঠিত । আমরা তারা যারা বলে : একোবশী সর্বভূতান্তরাত্মা । সেই এক প্রভুই সর্বভূতের অন্তরাত্মা । আমরা তারা যারা বলে না যে, বাহিরের কোনো প্রক্রিয়া-দ্বারা ঈশ্বরকে জানা যায় অথবা কোনো বিশেষ শাস্ত্রে ঈশ্বরের জ্ঞান বিশেষ লোকের জন্যে আবদ্ধ হয়ে আছে। আমরা বলি : হৃদ মনীষা মনসাভিকৃ,প্তঃ । হৃদয়স্থিত সংশয়রহিত বুদ্ধির দ্বারাই তাকে জানা যায়। আমরা তার