পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Şas ভাবুকতা ও পবিত্রত ভাবরসের জন্যে আমাদের হৃদয়ের একটা লোভ রয়েছে। আমরা কাব্য থেকে, শিল্পকলা থেকে, গল্প গান অভিনয় থেকে নানা উপায়ে ভীবরস সম্ভোগ করবার জন্যে নানা আয়োজন করে থাকি । অনেক সময় আমরা উপাসনাকে সেইপ্রকার ভাবের তৃপ্তি-স্বরূপে অবলম্বন করতে ইচ্ছা করি। কিছুক্ষণের জন্যে একটা বিশেষ রস ভোগ করে আমরা মনে করি; যেন আমরা একটা কিছু লাভ করলুম। ক্রমে এই ভোগের অভ্যাসটি একটি নেশার মতো হয়ে দাড়ায়। তখন মানুষ অন্যান্য রসলাভের জন্যে যেমন নানা আয়োজন করে, নানা লোক নিযুক্ত করে, নানা পণ্যদ্রব্য বিস্তার করে, এই রসের অভ্যস্ত নেশার জন্যেও সেইরকম নানাপ্রকার আয়োজন করে। যারা ভালো করে বলতে পারেন সেইরকম লোক সংগ্রহ করে রসোন্দ্রেক করবার জন্যে নিয়মিত বক্তৃতাদির ব্যবস্থা করা হয়— ভগবৎ-রস নিয়মিত জোগান দেবার নানা দোকান তৈরি হয়ে ওঠে । এইরকম ভাবের পাওয়াকেই পাওয়া বলে ভুল করা মাহুষের দুর্বলতার একটা লক্ষণ। সংসারে নানা প্রকারে আমরা তার পরিচয় পাই। এমন লোক দেখা যায় যারা অতি সহজেই গদগদ হয়ে ওঠে, সহজেই গল। জড়িয়ে ধরে মানুষকে ভাই বলতে পারে— যাদের দয়। সহজেই প্রকাশ পায়, অশ্রু সহজেই নিঃসারিত হয় এবং সেইরূপ ভাবঅনুভব ও ভাব-প্রকাশকেই তারা ফললাভ বলে গণ্য করে। সুতরাং ওইখানেই থেমে পড়ে, আর বেশিদূর ষায় না। এই ভাবের রসকে আমি নিরর্থক বলি নে । কিন্তু, একেই যদি লক্ষ্য বলে ভুল করি তা হলে এই জিনিসটি যে কেবল নিরর্থক হয় তা নয়,