পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাস্তিনিকেতন جسر לר צ ষেখানে ধ’রে অাছে সেখানে ধরেই আছে, কেবলই গভীর থেকে গভীরতরে গিয়ে নাবছে । সে শুদ্ধচারিণী স্নাত পবিত্র সেবিকার মতো সকলের নীচে জোড়হাতে ভগবানের পায়ের কাছে দাড়িয়ে আছে— দাড়িয়েই আছে । হৃদয়ের কত পরিবর্তন ! আজি তার যে কথায় তৃপ্তি কাল তার তাতে বিতৃষ্ণ । তার মধ্যে জোয়ার ভাটা খেলছে, কখনো তার উল্লাস কখনো অবসাদ । গাছের পল্লবের মতো তার বিকাশ আজ নূতন হয়ে উঠছে, কাল জীর্ণ হয়ে পড়ছে। এই পল্লবিত চঞ্চল হৃদয় নব নব ভাবসংস্পর্শের জন্য ব্যাকুলতায় স্পন্দিত । কিন্তু, মূলের সঙ্গে চরিত্রের সঙ্গে যদি তার অবিচলিত অবিচ্ছিন্ন যোগ না থাকে, তা হলে এইসকল ভাব-সংস্পর্শ তার পক্ষে আঘাত ও বিনাশেরই কারণ হয়। যে গাছের শিকড় কেটে দেওয়া হয়েছে সূর্যের আলে৷ তাকে শুকিয়ে ফেলে, বৃষ্টির জল তাকে পচিয়ে দেয় । আমাদের চরিত্রের ভিতরকার নিষ্ঠ যদি যথেষ্ট পরিমাণে খাদ্য জোগানো বন্ধ করে দেয়, তা হলে ভাবের ভোগ আমাদের পুষ্টিসাধন করে না, কেবল বিকৃতি জন্মাতে থাকে। দুর্বল ক্ষীণ চিত্তের পক্ষে ভাবের খাদ্য কুপথ্য হয়ে ওঠে। চরিত্রের মূল থেকে প্রত্যহ আমরা পবিত্রতা লাভ করলে তবেই ভাবুকত আমাদের সহায় হয়। ভাবরসকে খুজে বেড়াবার দরকার নেই ; সংসারে ভাবের বিচিত্র প্রবাহ নানা দিক থেকে আপনিই এসে পড়ছে । পবিত্রতাই সাধনার সামগ্রী । সেটা বাইরের থেকে বর্ষিত হয় না— সেটা নিজের থেকে আকর্ষণ করে নিতে হয়। এই পবিত্রতাই আমাদের মূলের জিনিস, আর ভাবুকত পল্লবের । প্রত্যহ আমাদের উপাসনায় আমরা সুগভীর নিস্তব্ধ-ভাবে সেই পবিত্রতা-গ্রহণের দিকেই আমাদের চেতনাকে যেন উদবোধিত করে