পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Эbr o শান্তিনিকেতন সামাজিক কাজ, সামাজিক আমোদ স্বষ্টি করে আমাদের মনের উদ্যমকে আকর্ষণ করে নেয়। এই উদ্যমকে কোন কাজে লাগিয়ে কেমন করে মনকে শাস্ত করব, সে কথা অার চিন্তা করতেই হয় না— লোকলৌকিকতার বিচিত্র কৃত্রিম নালায় আপনি সে প্রবাহিত হয়ে যায় । যে ব্যক্তি অমিতব্যয়ী সে যে লোকের দুঃখ দূর করবার জন্যে দান করে নিজেকে নিঃস্ব করে তা নয়— ব্যয় করবার প্রবৃত্তিকে সে সম্বরণ করতে পারে না। নানা রকমের খরচ ক’রে তার উদ্যম ছাড়া পেয়ে খেল ক’রে খুশি হয়। সমাজে আমাদের সামাজিকতা বহুলাংশে সেই ভাবে নিজের শক্তিকে খরচ করে, সে যে সমাজের লোকের প্রতি বিশেষ প্রীতি-বশত তা নয়, কিন্তু নিজেকে খরচ করে ফেলবার একটা প্রবৃত্তি-বশত । চর্চা-দ্বারা এই প্রবৃত্তি কিরকম অপরিমিতরূপে বেড়ে উঠতে পারে তা যুরোপে যারা সমাজবিলাসী তাদের জীবন দেখলে বোঝা যায়। সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত তাদের বিশ্রাম নেই— উত্তেজনার পর উত্তেজনার আয়োজন । কোথায় শিকার, কোথায় নাচ, কোথায় খেলা, কোথায় ভোজ, কোথায় ঘোড়দৌড়, এই নিয়ে তারা উন্মত্ত। তাদের জীবন কোনো লক্ষ্য স্থির করে কোনো পথ বেয়ে চলছে না ; কেবল দিনের পর দিন, রাত্রির পর রাত্রি, এই উন্মাদনার রাশিচক্রে ঘুরছে। আমাদের জীবনীশক্তির মধ্যে এত বেশি বেগ নেই বলে আমরা এতদূর যাই নে, কিন্তু আমরাও সমস্তদিন অপেক্ষাকৃত মৃদুতর ভাবে সামাজিক বাধা পথে কেবলমাত্র মনের শক্তিকে খরচ করবার জন্যেই খরচ করে থাকি। মনকে মুক্তি দেবার, শক্তিকে খাটিয়ে নেবার আরকোনো উপায় আমরা জানি নে । দানে এবং ব্যয়ে অনেক তফাত । আমরা মামুষের জন্তে যা দান