পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভাগ ‘ · זר לצ বিভাগটি ভালোরকম না হলে ঐক্যটিও ভালোরকম হয় না। অপরিণতি যখন পিণ্ডাকারে থাকে, যখন তার কলেবর বৈচিত্র্যে বিভক্ত না হয়েছে, তখন তার মধ্যে একের মূর্তি পরিস্ফুট হয় না। আমাদের মধ্যে খুব একটি বড়ো বিভাগের স্থান আছে, সেটি হচ্ছে অন্তর এবং বাহিরের বিভাগ। যতদিন সেই বিভাগটি বেশ স্বনির্দিষ্ট না হবে ততদিন অন্তর ও বাহিরের ঐক্যটিও পরিপূর্ণ তাৎপর্ষে স্বন্দর হয়ে উঠবে না । এখন আমাদের এমনি হয়েছে, আমাদের একটিমাত্র মহল ! স্বার্থপরমার্থ নিত্য-অনিত্য সমস্তই আমাদের ওই এক জায়গায় যেমন-তেমন করে রাখা ছাড়া উপায় নেই। সেইজন্যে একটা অন্যটাকে আঘাত করে, বাধা দেয়, একের ক্ষতি অন্তের ক্ষতি হয়ে ওঠে। যে জিনিসটা বাহিরের তাকে বাহিরেই রাখতে হবে, তাকে অস্তরে নিয়ে গিয়ে তুললে সেখানে সেটা জঞ্জাল হয়ে ওঠে। যেখানে যার স্থান নয় সেখানে সে যে অনাবশ্যক তা নয়, সেখানে সে অনিষ্টকর। অতএব, আমাদের জীবনের প্রধান সাধনাই এই বাহিরের জিনিস যাতে বাহিরেই থাকতে পারে, ভিতরে গিয়ে যাতে সে বিকারের স্বষ্টি না করে । সংসারে আমাদের পদে পদে ক্ষতি হয়, আজ যা আছে কাল তা থাকে না। সেই ক্ষতিকে আমরা বাহিরের সংসারেই কেন রাখি না ? তাকে আমরা ভিতরে নিয়ে গিয়ে তুলি কেন ? গাছের পাতা আজ কিশলয়ে উদগত হয়ে কাল জীর্ণ হয়ে ঝরে পড়ে। কিন্তু, সে তো বাইরেই ঝরে পড়ে যায়। সেই তার বাহিরের অনিবাৰ্য ক্ষতিকে গাছ তার মজ্জার ভিতরে তো পোষণ করে না। বাহিরের ক্ষতি বাইরেই থাকে, অস্তরের পুষ্টি অস্তরেই অব্যাহতভাবে চলে ।