পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృS 8 শান্তিনিকেতন জিনিসেরই পরিসমাপ্তি নেই। আমাদের শরীর বুদ্ধি মনও প্রকৃতির এই চক্রে ঘুরছে, ক্রমাগতই তার সংযোগবিয়োগ হ্রাসবৃদ্ধি তার অবস্থান্তর চলেছে। , প্রকৃতির এই সুর্যতারাময় লক্ষকোটি চাকার রথ ধাবিত হচ্ছে— কোথাও এর শেষ গম্যস্থান দেখি নে, কোথাও এর স্থির হবার নেই। আমরাও কি এই রথে চড়েই এই লক্ষ্যহীন অনন্ত পথেই চলেছি, যেন এক জায়গায় যাবার অাছে এইরকম মনে হচ্ছে অথচ কোনো কালে কোথাও পৌছোতে পারছি নে ? আমাদের অস্তিত্বই কি এইরকম অবিশ্রাম চলা, এইরকম অনন্ত সন্ধান ? এর মধ্যে কোথাও কোনোরকম প্রাপ্তির, কোনোরকম স্থিতির তত্ত্ব নেই ? এই যদি সত্য হয়, দেশকালের বাইরে আমাদের যদি কোনো গতিই না থাকে, তা হলে যিনি দেশকালের অতীত, যিনি অভিব্যঞ্জমান নন, যিনি আপনাতে পরিসমাপ্ত, তিনি আমাদের পক্ষে একেবারেই নেই। সেই পূর্ণতার স্থিতিধর্ম যদি আমাদের মধ্যে একান্তই না থাকে, তবে অনস্তস্বরূপ পরব্রহ্মের প্রতি আমরা যা-কিছু বিশেষণ প্রয়োগ করি সে কেবল কতকগুলি কথা মাত্র ; আমাদের কাছে তার কোনো অর্থ ই নেই। عالية তা যদি হয় তবে এই ব্রহ্মের কথাটাকে একেবারেই ত্যাগ করতে হয়। র্যাকে কোনো কালেই পাব না তাকে অনন্তকাল খোজার মতো বিড়ম্বন আর কী আছে ? তা হলে এই কথাই বলতে হয় : সংসারকেই পাওয়া যায়, সংসারই আমার আপনার, ব্ৰহ্ম আমার কেউ নন। কিন্তু, সংসারকেও তো পাওয়া যায় না। সংসার তো মায়ামৃগের মতো আমাদের কেবলই এগিয়ে নিয়ে দৌড় করায়, শেষ ধরা তো দেয় না। কেবলই খাটিয়ে মারে, ছুটি দেয় না ; ছুটি যদি দেয় তো একেবারে বরখাস্ত করে— এমন কোনো সম্বন্ধ স্বীকার করে না যা চরম সম্বন্ধ ।