পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিণয় ఇ& শুশকরা গাড়ির গাড়োয়ানের সঙ্গে ঘোড়ার যে সম্বন্ধ তার সঙ্গে আমাদেরও সেই সম্বন্ধ। অর্থাৎ, সে কেবলই আমাদের চালাবে, খাওয়াবে সেও চালাবার জন্যে, মাঝে মাঝে যেটুকু বিশ্রাম করাবে সেও কেবল চালাবার জন্যে— চাৰুক লাগাম সমস্তই চালাবার উপকরণ। যখন না চলব তখন খাওয়াবেও না, আস্তাবলেও রাখবে না, ভাগাড়ে ফেলে দেবে। অথচ এই চালাবার ফল ঘোড়া পায় না । ঘোড়া স্পষ্ট করে জানেও না সে ফল কে পাচ্ছে । ঘোড়া কেবল জানে যে তাকে চলতেই হবে। সে মূঢ়ের মতো কেবলই নিজেকে প্রশ্ন করছে, ‘কোনোকিছুই পাচ্ছি নে, কোথাও গিয়ে পোঁচোচ্ছি নে, তবু দিনরাত কেবলই চলছি কেন ? পেটের মধ্যে অগ্নিময় ক্ষুধার চাবুক পড়ছে, হৃদয় মনের মধ্যে কত শত জালাময় ক্ষুধার চাবুক পড়ছে, কোথাও স্থির থাকতে দিচ্ছে না। এর অর্থ কী ? যাই হোক কথা হচ্ছে এই যে, সংসারকে তো কোনোখানেই পাচ্ছি নে, তার কোনোখানে এসেই থামছি নে— ব্রহ্মও কি সেই সংসারেরই মতো ? তাকেও কি কোনোখানেই পাওয়া যাবে না ? তিনিও কি আমাদের অনন্তকালই চালাবেন এবং সেই পাওয়া-হীন চলাকেই অনন্ত উন্নতি ব’লে আমরা নিজের মনকে কেবলই কোনোমতে সাত্বনা দিতে চেষ্টা করব ? Af তা নয়। ব্রহ্মকেই পাওয়া যায়, সংসারকে পাওয়া যায় না। কারণ, সংসারের মধ্যে পাওয়ার তত্ত্ব নেই, সংসারের তত্ত্বই হচ্ছে সরে যাওয়া । সুতরাং, তাকেই চরমভাবে পাবার চেষ্টা করলে কেবল দুঃখই পাওয়া হবে। কিন্তু, ব্রহ্মকেও চরমভাবে পাবার চেষ্টা করলে কেবল চেষ্টাই সার হবে, এ কথা বলা কোনোমতেই চলবে না। পাওয়ার তত্ত্ব কেবল একমাত্র ব্রহ্মেই আছে। কেননা, তিনিই হচ্ছেন সত্য। আমাদের অন্তরাত্মার মধ্যে পরমাত্মাকে পাওয়া পরিসমাপ্ত হয়ে