পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিণয় >?" এর পরিণয় একেবারে সমাধা হয়ে গেছে । তার আর কোনো-কিছু বাকি নেই, কেননা তিনি একে স্বয়ং বরণ করেছেন। কোন অনাদি কালে সেই পরিণয়ের মন্ত্র পড়া হয়ে গেছে ! বলা হয়ে গেছে : স্বদেতৎ হৃদয়ং মম তদন্তু হৃদয়ং তব। এর মধ্যে আর ক্রমাভিব্যক্তির পৌরোহিত্য নেই। তিনি ‘অস্ত’ ‘এষঃ’ হয়ে আছেন। তিনি এর এই হয়ে বসেছেন, নাম করবার জো নেই। তাই তো ঋষি কবি বলেন— এষাস্থ্য পরম গতিঃ এষাস্থ্য পরম সম্পৎ এযোহস্ত পরমোলোকঃ এষোহস্ত পরম আনন্দঃ । পরিণয় তো সমাপ্তই হয়ে গেছে, সেখানে আর কোনো কথা নেই। এখন কেবল অনন্ত প্রেমের লীলা। র্যাকে পাওয়া হয়ে গেছে তাকেই নানা রকম করে পাচ্ছি— মুখে দুঃখে, বিপদে সম্পদে, লোকে লোকাস্তরে। বধু যখন সেই কথাটা ভালো করে বোঝে তখন তার আর কোনো ভাবনা থাকে না । তখন সংসারকে তার স্বামীর সংসার বলে জানে, সংসার তাকে আর পীড়া দিতে পারে না, সংসারে তার আর ক্লাস্তি নেই– সংসারে তার প্রেম। তখন সে জানে যিনি ‘সত্যং জ্ঞানমনস্তম্ হয়ে অন্তরাত্মাকে চিরদিনের মতো গ্রহণ করে আছেন, সংসারে তারই ‘আনন্দরূপমমৃতং বিভাতি’— সংসারে তারই প্রেমের লীলা। এইখানেই নিত্যের সঙ্গে অনিত্যের চিরযোগ— আনন্দের, অমৃতের যোগ। এইখানেই আমাদের সেই বরকে, সেই চিরপ্রাপ্তকে, সেই একমাত্রপ্রাপ্তকে বিচিত্র বিচ্ছেদমিলনের মধ্যে দিয়ে, পাওয়া-নাপাওয়ার বহুতর ব্যবধান-পরম্পরার ভিতর দিয়ে নানা রকমে পাচ্ছি ; র্যাকে পেয়েছি তাকেই আবার হারিয়ে হারিয়ে পাচ্ছি, তাকেই নানা রসে পাচ্ছি। যে বধুর মুঢ়তা ঘুচেছে, এই কথাটা যে জেনেছে, এই