পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“ о о শান্তিনিকেতন ভয়ের দ্বারা, ভক্তির দ্বারা, বাহিরকে নানা রকম করে নেড়েচেড়ে, তাকে নানা রকমে আঘাত করে এবং তার দ্বারা আঘাত খেয়ে আমরা বাহিরের পরিচয়ের সীমায় এসে ঠেকি । তখন বাহিরকেই আর পূর্বের মতো একমাত্র বলে মনে হয় না। তখন তাকেই আমাদের একমাত্র গতি, একমাত্র আশ্রয়, একমাত্র সম্পদ বলে আর জানি নে। সে আমাদের সম্পূর্ণ আশাকে জাগিয়ে তুলে একদিন আমাদের সমস্ত মনকে টেনে নিয়েছিল ব’লেই যখন আমরা তার সীমা দেখতে পেলুম তখন তার উপরে আমাদের একান্ত অশ্রদ্ধা জন্মালো। তখন প্রকৃতিকে মায়াবিনী বলে গাল দিতে লাগলুম, সংসারকে একেবারে সর্বতোভাবে অস্বীকার করবার জন্যে মনে বিদ্রোহ জন্মালো। তখন বলতে লাগলুম, যার মধ্যে কেবলই আধিব্যাধি মৃত্যু, কেবলই ঘানির বলদের চলার মতো অনস্ত প্রদক্ষিণ, তাকেই আমরা সত্য বলে তারই কাছে সমস্ত আত্ম-সমর্পণ করেছিলুম— আমাদের এই মূঢ়তাকে ধিক্ । তখন বাহিরকে নিঃশেষে নিরস্ত করে দিয়ে আমরা অন্তরেই বাস। বাধবার চেষ্টা করলুম। যে বাহিরকে একদিন রাজা বলে মেনেছিলুম তাকে কঠোর যুদ্ধে পরাস্ত করে দিয়ে ভিতরকেই জয়ী বলে প্রচার করলুম। ষে প্রবৃত্তিগুলি এতদিন বাহিরের পেয়াদা হয়ে আমাদের সর্বদাই বাহিরের তাগিদেই ঘুরিয়ে মেরেছিল তাদের জেলে দিয়ে, শূলে চড়িয়ে, ফালি দিয়ে, একেবারে নির্মল করবার চেষ্টায় প্রবৃত্ত হলুম। ষে-সমস্ত কষ্ট ও অভাবের ভয় দেখিয়ে বাহির আমাদের দাসত্বের শৃঙ্খল পরিয়েছিল, সেইসকল কষ্ট ও অভাবকে আমরা একেবারে তুচ্ছ করে দিলুম। রাজস্বয় যজ্ঞ ক’রে উত্তরে দক্ষিণে পূর্বে পশ্চিমে বাহিরের সমস্ত দোদও প্রতাপ রাজাকে হরি মানিয়ে জয়পতাকা আমাদের অস্তুররাজধানীর উচ্চপ্রাসাদচুড়ায় উড়িয়ে দিলুম। বাসনার পায়ে শিকল