পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“ o o শান্তিনিকেতন রাজার ছেলেকে মাস্টারের হাতে দেওয়া হয়েছে। মাস্টার তাকে শিখিয়ে পড়িয়ে, তার মূঢ়তা জড়তা দূর করে তাকে রাজত্বের পূর্ণ অধিকারের যোগ্য করে দেবে, এই ছিল তার সঙ্গে বোঝাপড়া । রাজ৷ যে কারও দাস নয় এই শিক্ষাই হচ্ছে তার সকল শিক্ষার শেষ। . কিন্তু, মাস্টার অনেক সময় তার ছাত্রকে এমনি নানা প্রকারে অভিভূত করে ফেলে, মাস্টারের প্রতিই একান্ত নির্ভর করার মুগ্ধ সংস্কারে এমনি জড়িত করে যে, বড়ো হয়ে সে নামমাত্র সিংহাসনে বসে, সেই মাস্টারই রাজার উপর রাজত্ব করতে থাকে। তেমনি বাহিরও যখন শিক্ষাদানের চেয়ে বেশি দূরে গিয়ে পৌছোয়, যখন সে আমাদের উপর চেপে পড়বার জো করে, তখন তাকে একেবারে বরখাস্ত করে দিয়ে তার জাল কাটবার পন্থাই হচ্ছে শ্রেয়ের পন্থা । বাহির যে শক্তি-দ্বারা আমাদের চেষ্টাকে বাইরের দিকে টেনে নিয়ে যায় তাকে আমরা বলি বাসনা। এই বাসনায় আমাদের বাইরের বিচিত্র বিষয়ের অনুগত করে। যখন যেটা সামনে এসে দাড়ায় তখন সেইটেই আমাদের মনকে কাড়ে—এমনি করে আমাদের মন নানার মধ্যে বিক্ষিপ্ত হয়ে বেড়ায়। নানার সঙ্গে প্রথম পরিচয়ের এই হচ্ছে সহজ উপায় । এই বাসনা যদি ঠিক জায়গায় না থামে, এই বাসনার প্রবলতাই যদি জীবনের মধ্যে সব চেয়ে বড়ো হয়ে ওঠে, তা হলে আমাদের জীবন তামসিক অবস্থাকে ছাড়াতে পারে না ; আমরা নিজের কর্তৃত্বকে অনুভব ও সপ্রমাণ করতে পারি না । বাহিরই কর্তা হয়ে থাকে, কোনোপ্রকার ঐশ্বৰ্ষলাভ আমাদের পক্ষে অসম্ভব হয়। উপস্থিত অভাব, উপস্থিত আকর্ষণই আমাদের এক ক্ষুদ্রতা থেকে আর-এক ক্ষুদ্রতায় ঘুরিয়ে মারে। এমন অবস্থায় কোনো স্থায়ী জিনিসকে মাহুষ গড়ে তুলতে পারে না। এই বাসনা কোন জায়গায় গিয়ে থামে ? ইচ্ছায়। বাসনার লক্ষ