পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& evo শান্তিনিকেতন মঙ্গল-ইচ্ছার সঙ্গে যাদের ইচ্ছা সম্মিলিত হয়েছে তারা যে বিশ্বজগতের সেই অমর শক্তি সেই স্বাভাবিকী ক্রিয়াশক্তিকে লাভ করেন, ইতিহাসে তার অনেক প্রমাণ আছে। বুদ্ধদেব কপিলবস্তুর মুখসমৃদ্ধি পরিহার করে যখন বিশ্বের মঙ্গল প্রচার করতে বেরিয়েছিলেন তখন কোথায় তার রাজকোষ, কোথায় তার সৈন্যসামন্ত। তখন বাহ উপকরণে তিনি তার পৈতৃক রাজ্যের দীনতম অক্ষমতম প্রজার সঙ্গে সমান। কিন্তু, তিনি যে বিশ্বের মঙ্গল-ইচ্ছার সঙ্গে তার ইচ্ছাকে যোজিত করেছিলেন, সেইজন্য র্তার ইচ্ছা সেই পরাশক্তির স্বাভাবিকৗ ক্রিয়াকে লাভ করেছিল। সেইজন্যে কত শত শতাব্দী হল র্তার মৃত্যু হয়ে গেছে, কিন্তু তার মঙ্গল-ইচ্ছার স্বাভাবিকী ক্রিয়া আজও চলছে। আজও বুদ্ধগয়ার নিভৃত মন্দিরে গিয়ে দেখি সুদূর জাপানের সমুদ্রতীর থেকে সংসারতাপতাপিত জেলে এসে অন্ধকার অধরাত্রে বোধিক্রমের সম্মুখে বসে সেই বিশ্বকল্যাণী ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পণ করে দিয়ে জোড়হাতে বলছে : বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি । আজও তার জীবন মানুষকে জীবন দিচ্ছে, তার বাণী মানুষকে অভয় দান করছে, তার সেই বহু সহস্ৰ বৎসর পূর্বের ইচ্ছার ক্রিয়ার আজও ক্ষয় হল না। যিশু কোন অখ্যাত গ্রামের প্রান্তে কোন-এক পশুরক্ষণশালায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন– কোনো পণ্ডিতের ঘরে নয়, কোনো রাজার প্রাসাদে নয়, কোনো মহৈশ্বর্যশালী রাজধানীতে নয়, কোনো মহাপুণ্যক্ষেত্র তীর্থস্থানে নয়। যারা মাছ ধরে জীবিকা অর্জন করত এমন কয়েকজন মাত্র ইহুদি যুবক তার শিষ্য হয়েছিল– যেদিন তাকে রোমরাজের প্রতিনিধি অনায়াসেই ক্রুশে বিদ্ধ করবার আদেশ দিলেন সেই দিনটি জগতের ইতিহাসে যে চিরদিন ধন্ত হবে এমন কোনো লক্ষণ সেদিন কোথাও প্রকাশ পায় নি। তার শত্রুরা মনে করলে সমস্তই চুকেবুকে গেল, এই অতি ক্ষুদ্র ক্ষুলিঙ্গটিকে একেবারে দলন করে নিবিয়ে