পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ oઝ শান্তিনিকেতন কথাকে স্পর্শ করাতে হবে, আমার মনের চিন্তাকে স্পর্শ করাতে হবে, আমার সংসারের কর্মকে স্পশ করতে হবে। তা হলে, যা হালকা ছিল এক মুহূর্তে তাতে গৌরবসঞ্চার হৰে, যা মলিন ছিল তা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে, যার কোনো দাম ছিল না তার মূল্য অনেক বেড়ে যাবে। আমাদের সকালবেলাকার এই উপাসনাটিকে ছোয়াব, সমস্তদিন সব-তাতে ছোয়াব— তার নামকে ছোয়াব, তার ধ্যানকে ছোয়াব, ‘শাস্তম্ শিবম্ অদ্বৈতম্! এই মন্ত্রটিকে ছোয়াব। উপাসনাকে কেবল হৃদয়ের ধন করব না, তাকে চরিত্রের সম্বল করব ; তার দ্বারা কেবল স্নিগ্ধতালাভ করব না, প্রতিষ্ঠালাভ করব। - লোকে প্রচলিত আছে প্রভাতের মেঘ ব্যর্থ হয়, তাতে বৃষ্টি দেয় না। আমাদের এই প্রভাতের উপাসনা যেন তেমনি ক্ষণকালের জন্য আবিৰ্ভত হয়ে সকালবেলাকার হাওয়াতেই উড়ে চলে না যায়। কেননা, যখন রৌদ্র প্রখর তখনই স্নিগ্ধতার দরকার, যখন তৃষ্ণ প্রবল তখনই বর্ষণ কাজে লাগে । সংসারের ঘোরতর কাজের মাঝখানেই শুষ্কত আসে, দাহ জন্মায়। ভিড় যখন খুব জমেছে, কোলাহল যখন খুব জেগেছে, তখনই আপনাকে হারিয়ে ফেলি ; আমাদের প্রভাতের সঞ্চয়কে সেই সময়েই যদি কোনো কাজে লাগাতে না পারি, সে যদি দেবত্র সম্পত্তির মতো মন্দিরেরই পূজাৰ্চনার কাজে নিযুক্ত থাকে, সংসারের প্রয়োজনে তাকে খাটাবার জো না থাকে— তা হলে কোনো কাজ হল না । দিনের মধ্যে এক-একটা সময় আছে যে সময়টা অত্যন্ত নীরস, অত্যন্ত অনুদার । যে সময়ে ভূমা সকলের চেয়ে প্রচ্ছন্ন থাকেন, যে সময়ে হয় আমরা একান্তই আপিসের জীব হয়ে উঠি নয়তো আহারপরিপাকের জড়তায় আমাদের অন্তরাত্মার উজ্জলতা অত্যন্ত স্নান হয়ে