পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অভ্যাস 》 নিয়ে আসি, পাছে এখানে আসবার সময় কিছুমাত্র ক্লেশ বোধ করি, কিছুমাত্র আলস্যের বাধা ঘটে, পাছে তখন কোনো আমোদের বা কাজের আকর্ষণে আমাদের ভিতরে ভিতরে একটা বিমুখতার স্বটি করে। উপাসনায় শৈথিল্য করলে অভ্যন্ত র্যার উপাসনা করেন তারা যদি কিছু মনে করেন, যদি কেউ নিন্দ করেন বা বিরক্ত হন –পাছে এই তাগিদটাই সকলের চেয়ে বড়ো হয়ে ওঠে। সেইজন্যে এক-এক সময়ে বলতে ইচ্ছা করে, মন সম্পূর্ণ অমুকুল, সম্পূর্ণ ইচ্ছুক না হলে এ জায়গায় কেউ এসো না।’ * কিন্তু, সংসারটা যে কী জিনিস তা যে জানি। এ সংসারের অনেকটা পথ মাড়িয়ে আজ বাধক্যের দ্বারে এসে উত্তীর্ণ হয়েছি। জানি দুঃখ কাকে বলে, আঘাত কী প্রচণ্ড, বিপদ কেমন অভাবনীয়। যে সময়ে আশ্রয়ের প্রয়োজন সকলের বেশি সেই সময়ে আশ্রয় কিরূপ দুর্লভ। তিনিহীন জীবন যে অত্যন্ত গৌরবহীন, চার দিকেই তাকে টানাটানি করে মারে। দেখতে দেখতে তার স্বর নেবে যায়, তার কথা চিন্তা কাজ তুচ্ছ হয়ে আসে। সে জীবন যেন অনাবৃত— সে এবং তার বাইরের মাঝখানে কেউ যেন তাকে ঠেকাবার নেই। ক্ষতি একেবারেই তার গায়ে এসে লাগে, নিন্দ একেবারেই তার মর্মে এসে আঘাত করে, দুঃখ কোনো ভাবরসের মাঝখান দিয়ে স্বন্দর বা মহৎ হয়ে ওঠে না। স্বখ একেবারে মত্ততা এবং শোকের কারণ একেবারে মৃত্যুবাণ হয়ে এসে তাকে বাজে। এ কথা যখন চিন্তা করে দেখি তখন সমস্ত সংকোচ মন হতে দূর হয়ে যায়— তখন ভীত হয়ে বলি : না, শৈথিল্য করলে চলবে না। একদিনও ভুলব না ; প্রতিদিনই তার সামনে এসে দাড়াতেই হবে ; ৷ প্রতিদিন কেবল সংসারকেই প্রশ্রয় দিয়ে, তাকেই কেবল বুকের সমস্ত রক্ত খাইয়ে প্রবল করে তুলে,নিজেকে এমন অসহায়ভাবে একান্তই তার হাতে আপাদমস্তক সমর্পণ করে দেব না ; দিনের মধ্যে অস্তুত একবার