পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৈরাগ্য ૨8 ૧ স্পষ্ট মনে আছে যেদিন জল পড়ে’ ‘পাতা নড়ে বাক্যগুলি পড়েছিলুম সেদিন ভারী আনন্দ হয়েছিল ; কারণ, শব্দগুলি তখন পূর্ণতর অর্থে ভরে উঠল । এখন শুদ্ধমাত্র "জল পড়ে’ ‘পাতা নড়ে' আবৃত্তি করতে মনে স্থখ হয় না, বিরক্তি বোধ হয় ; এখন ব্যাপক-অর্থ-যুক্ত বাক্যাবলীর মধ্যেই শব্দবিন্যাসকে সার্থক বলে উপলব্ধি করতে চাই । বিচ্ছিন্ন আত্মা তেমনি বিচ্ছিন্ন পদের মতো। তার একার মধ্যে তার তাৎপর্যকে পূর্ণরূপে পাওয়া যায় না। এইজন্তেই আত্মা নিজের সত্যকে নানার মধ্যে উপলব্ধি করতে চেষ্টা করে। সে যখন আত্মীয় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যুক্ত হয় তখন সে নিজের সার্থকতার একটা রূপ দেখতে পায় ; সে যখন আত্মীয় পরকীয় বহুতর লোককে আপন করে জানে তখন সে অার ছোটো আত্মা থাকে না, তখন সে মহাত্মা হয়ে ওঠে । ■ এর একমাত্র কারণ, আত্মার পরিপূর্ণ সত্যটি আছে পরমাত্মার মধ্যে। আমার আমি সেই একমাত্র মহা-আমিতেই সার্থক। এইজন্যে সে জেনে এবং না জেনেও সেই পরম-আমিকেই খুজছে। আমার আমি যখন পুত্রের আমিতে গিয়ে সংযুক্ত হয় তখন কী ঘটে ? তখন, যে পরম-আমি আমার আমির মধ্যেও আছেন, পুত্রের আমির মধ্যেও আছেন, তাকে উপলব্ধি করে আমার আনন্দ হয়। কিন্তু, তখন মুশকিল হয় এই যে, আমার আমি এই উপলক্ষ্যে যে সেই বড়ো-আমির কাছেই একটুখানি এগোলে তা সে স্পষ্ট বুঝতে পারে না । সে মনে করে সে পুত্রকেই পেল এবং পুত্রের কোনো বিশেষ গুণবশতই পুত্র আনন্দ দেয়। সুতরাং, এই আসক্তির বন্ধনেই সে আটক পড়ে যায়। তখন সে পুত্ৰ-মিত্রকে কেবলই জড়িয়ে বসে থাকতে চায়। তখন সে এই আসক্তির টানে অনেক পাপেও লিপ্ত হয়ে পড়ে। : এইজন্য সত্যজ্ঞানের দ্বারা বৈরাগ্য উদ্রেক করবার জন্তেই ৰাজ্ঞবল্ক্য