পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨રના শান্তিনিকেতন করে দেয়। রোজই এক ভাবে চলতে চলতে আমাদের শৈথিল্য এবং অমনোযোগ আসতে থাকে। নিষ্ঠা কখনো ভুলতে চায় না ; সে আমাদের ঠেলে দিয়ে বলে, “এ কী হচ্ছে ! এ কী করছ ? সে মনে করিয়ে দেয়, ঠাণ্ডার সময় যদি এগিয়ে না থাক তবে রৌদ্রের সময় ষে কষ্ট পাবে।’ সে দেখিয়ে দেয়, “তোমার জলাধারের ছিদ্র দিয়ে জল পড়ে যাচ্ছে, পিপাসার সময় উপায় কী হবে ? আমরা সমস্তদিন কত রকম করে যে শক্তির অপব্যয় করে চলি তার ঠিকানা নেই– কত বাজে কথায়, কত বাজে কাজে । নিষ্ঠ হঠাৎ স্মরণ করিয়ে দেয়, “এই যে জিনিসটা এমন করে ফেলাছড়া করছ এটার যে খুব প্রয়োজন আছে – একটু চুপ করে, একটু স্থির হও, অত বাড়িয়ে বোলো না, অমন মাত্রা ছাড়িয়ে চোলো না, যে জল পান করবার জন্যে যত্নে সঞ্চিত করা দরকার সে জলে খামক পা ডুবিয়ে বোসে না।” আমরা যখন খুব আত্মবিস্তৃত হয়ে একটা তুচ্ছতার ভিতরে একেবারে গলা পর্যন্ত নেবে গিয়েছি তখনও সে আমাদের ভোলে না ; বলে, “ছি, এ কী কাও ! বুকের কাছেই সে বসে আছে, কিছুই তার দৃষ্টি এড়াতে চায় না । সিদ্ধিলাভের কাছাকাছি গেলে প্রেমের সহজ প্রাজ্ঞতা লাভ হয়, তখন মাত্রাবোধ আপনি ঘটে। সহজ কবি যেমন সহজেই ছন্দোরক্ষা করে চলে আমরা তেমনি সহজেই জীবনকে আগাগোড়া সৌন্দর্যের মধ্যে বিশুদ্ধরূপে নিয়মিত করতে পারি। তখন স্থলন হওয়াই শক্ত হয় । কিন্তু, রিক্ততার দিনে সেই আনন্দের সহজ শক্তি যখন থাকে না তখন পদে পদে মতিপতন হয় ; যেখানে খামবার নয় সেখানে আলন্ত করি, যেখানে থামবার সেখানে বেগ সামলাতে পারি নে। তখন এই কঠোর নিষ্ঠাই আমাদের একমাত্র সহায়। তার ঘুম নেই, সে জেগেই আছে। সে বলে, ও কী ! ওই-ষে একটা রাগের রক্ত জাভা দেখা দিল । ওই-যে