পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রেলগাড়িতে চড়লুম। তখন শীতকাল। সেদিন কুহেলিকায় চারি দিক আচ্ছন্ন, বরফ পড়ছে। লগুন ছাড়িয়ে স্টেশনগুলি বাম দিকে আসতে লাগল। যখন গাড়ি থামে আমি জানলা খুলে বাম দিকে মুখ বাড়িয়ে সেই কুয়াশালিপ্ত অস্পষ্টতার মধ্যে কোনো-এক ব্যক্তিকে ডেকে স্টেশনের নাম জেনে নিতে লাগলুম। আমার গম্য স্টেশনটি শেষ স্টেশন। সেখানে যখন গাড়ি থামল আমি বাম দিকেই তাকালুম— লে দিকে আলো নেই প্ল্যাটফর্ম নেই দেখে নিশ্চিন্ত হয়ে বসে রইলুম। ক্ষণকাল পরেই গাড়ি আবার লওনের অভিমুখে পিছোতে আরম্ভ করল। আমি বলি, এ কী হল । পরের স্টেশনে যখন গাড়ি থামল জিজ্ঞাসা করলুম, ‘অমুক স্টেশন কোথায় ? উত্তর শুনলুম, সেখান থেকে তুমি ষে এইমাত্র আসছ।’ তাড়াতাড়ি নেমে পড়ে জিজ্ঞাসা করলুম, এর পরের গাড়ি কখন পাওয়া যাবে ? উত্তর পেলুম, অধরাত্রে। গম্য স্টেশনটি ডান দিকে ছিল । আমরা জীবনযাত্রায় কেবল বঁ। দিকের স্টেশনগুলিরই খোজ নিয়ে চলেছি। ডান দিকে কিছুই নেই বলে একেবারে নিশ্চিন্ত। একটার পর একটা পার হয়েই গেলুম। যে স্থানে নামবার ছিল সেখানেও সংসারের দিকেই, ওই বাম দিকেই চেয়ে দেখলুম। দেখলুম সমস্ত অন্ধকার, সমস্ত কুয়াশায় অস্পষ্ট। যে স্থযোগ পাওয়া গিয়েছিল সে সুযোগ কেটে গেল ; গাড়ি ফিরে চলেছে। যেখানে নিমন্ত্রণ ছিল সেখানে আমোদ আহলাদ অতীত হতে চলল। আবার গাড়ি কখন পাওয়া বাবে ? এই-যে স্থযোগ পেয়েছিলুম ঠিক এমন স্থযোগ কখন পাৰ, কোন অধরাত্রে ? ஆ. ስ . মানবজীবনের ভিতর দিয়েই যে চরম স্থানে যাওয়া যেতে পারে। এমন একটা স্টেশন আছে। সেখানে যদি না নামি, সেখানকার প্ল্যাটফর্ম যে দিকে সে দিকে যদি না তাকাই, তবে লমন্ত যাত্রাই যে i