পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

398 শাস্তিনিকেতন

  • আমার কাছে একটা নিতান্ত কুহেলিকাবৃত নিরর্থক ব্যাপার বলে ঠেকবে তাতে সন্দেহ কী আছে! কেন যে টিকিটের দাম দিলুম, কেন যে গাড়িতে উঠলুম, অন্ধকার রাত্রির ভিতর দিয়ে কেন যে চললুম, কী যে হল, কিছুই বোঝা গেল না। নিমন্ত্রণ আমার কোথায় ছিল, ভোজের আয়োজনটা কোথায় হয়েছে, ক্ষুধা আমার কোনখানে মিটবে, আশ্ৰয় আমি কোনখানে পাব— সে প্রশ্নের কোনো উত্তর না পেয়েই হতবুদ্ধি হয়ে যাত্রা শেষ করতে হল।

হে সত্য, আর কিছু নয়, যে দিকে তুমি, যে দিকে সত্য, সেই দিকে আমার মুখ ফিরিয়ে দাও— আমি যে কেবল অসত্যের দিকেই তাকিয়ে আছি। তোমার আনন্দলীলা-মঞ্চে তুমি সারি সারি অালো জালিয়ে দিয়েছ ; আমি তার উন্টো দিকের অন্ধকারে তাকিয়ে ভেবে মরছি, এ সমস্ত কী। তোমার জ্যোতির দিকে আমাকে ফেরাও । আমি কেবলই দেখছি মৃত্যু— তার কোনো মানেই ভেবে পাচ্ছি নে, ভয়ে সারা হয়ে যাচ্ছি। ঠিক তার ও পাশেই যে অমৃত রয়েছে, তার মধ্যে সমস্ত মানে রয়েছে, সে কথা আমাকে কে বুঝিয়ে দেবে! হে আবিঃ ! তুমি যে প্রকাশরুপে নিরস্তর রয়েছ, সেই প্রকাশের দিকেই আমার দৃষ্টি নেই। আমি হতভাগ্য । সেইজন্যে আমি কেবল তোমাকে রুদ্রই দেখছি, তোমার প্রসন্নতা ষে আমার আত্মাকে নিয়ত পরিবেষ্টিত করে রয়েছে তা জানতেই পারছিনে। মার দিকে পিঠ করে শিশু অন্ধকার দেখে কেঁদে মরে ; একবার পাশ ফিরলেই জানতে পারে মা ষে তাকে আলিঙ্গন করেই রয়েছেন। তোমার প্রসন্নতার দিকেই তুমি আমাদের পাশ ফিরিয়ে নাও হে জননী, তা হলেই এক মুহূর্তে জানতে পারব, আমি রক্ষা পেয়েই আছি, অনন্তকাল আমার রক্ষা— নইলে অরক্ষাভয়ের কান্না কোনোমতেই থামবে না । । . . ১৮ ফাল্গুন, .