পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:\9br শাস্তিনিকেতন ঈশ্বরবিবর্জিত যে জীবনটা গড়ে তুলেছি তার আকর্ষণ যে কত প্রবল তা তখনই বুঝতে পারি যখন তার দিকে যেতে চাই। যখন তার মধ্যেই বসে আছি তখন সে যে আমাকে বেঁধেছে তা বুঝতেই পারি নে। কিন্তু, প্রত্যেক অভ্যাস প্রত্যেক সংস্কারটিই কী কঠিন গ্রন্থি ! জ্ঞামে তাকে যতই তুচ্ছ বলে জানি নে কেন, কাজে তাকে ছাড়াতে পারি নে। একটা ছাড়ে তো দেখতে পাই তার পিছনে আরও পাচটা আছে। সংসারকে চরম আশ্রয় বলে জেনে এতদিন বহু যত্বে দিনে দিনে একটি একটি করে অনেক জিনিস সংগ্রহ করেছি— তাদের প্রত্যেকটির ফাকে ফঁাকে আমার কত শিকড় জড়িয়ে গেছে তার ঠিকানা নেই— তারা সবাই আমার। তাদের কোনোটাকেই একটুমাত্র স্থানচ্যুত করতে গেলেই মনে হয়, তবে আমি বঁচিব কী করে । তারা যে বঁচবার জিনিস নয় তা বেশ জানি, তবু চিরজীবনের সংস্কার তাদের প্রাণপণে অঁাকড়ে ধরে বলতে থাকে, এদের না হলে আমার চলবে না যে "খনকে আপনার বলে জানা যে নিতান্তই অভ্যাস হয়ে গেছে। সেই ধনের ঠিক ওজনটি ষে আজ বুঝব সে শক্তি কোথায় পাই! বহুদীর্ঘ কাল ধরে আমির ভারে সেই ধন যে পর্বতসমান ভারী হয়ে উঠেছে, তাকে একটুও নড়াতে গেলে যে বুকের পাজরে বেদন ধরে। এইজন্যেই ভগবান যিশু বলেছেন, যে ব্যক্তি ধনী তার পক্ষে মুক্তি অত্যন্ত কঠিন। ধন এখানে শুধু টাকা নয় ; জীবন যা-কিছুকেই দিনে দিনে আপনার বলে সঞ্চয় করে তোলে, যাকেই সে নিজের বলে মনে করে এবং নিজের দিকেই আঁকড়ে রাখে— সে ধনই হোক আর খ্যাতিই হোক, এমন-কি পুণ্যই হোক । এমন-কি, ওই পুণ্যের সঞ্চয়টা কম ঠকায় না। ওর একটি ভাব আছে, ধেন ও বা নিচ্ছে তা সব ঈশ্বরকেই দিচ্ছে। লোকের হিত