পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মরণ 3°芯 করছি, ত্যাগ করছি, কষ্ট স্বীকার করছি, অতএব আর ভাবনা নেই— আমার সমস্ত উৎসাহ ঈশ্বরের উৎসাহ, সমস্ত কর্ম ঈশ্বরের কর্ম। কিন্তু, এর মধ্যে যে অনেকখানি নিজের দিকেই জমাচ্ছি সে খেয়ালমাত্র নেই। যেমন মনে করো— আমাদের এই বিদ্যালয়। যেহেতু এটা মঙ্গলকাজ সেইহেতু এর যেন আর হিসাব দেখবার দরকার নেই, যেন এর সমস্তই ঈশ্বরের খাতাতেই জমা হচ্ছে। আমরা যে প্রতিদিন তহবিল ভাঙছি তার খোজও রাখি নে। এ বিদ্যালয় আমাদের বিদ্যালয়, এর সফলতা আমাদেরই সফলতা, এর দ্বারা আমরাই হিত করছি— এমনি ক’রে এ বিদ্যালয় থেকে আমার দিকে কিছু কিছু করে জমা হচ্ছে। সেই সংগ্ৰহ অামার অবলম্বন হয়ে উঠছে, সেটা একটা বিষয়সম্পত্তির মতো হয়ে দাড়াচ্ছে। এই কারণে তার জন্যে রাগারগি টানাটানি হতে পারে, তার জন্যে মিথ্যে সাক্ষী সাজাতেও ইচ্ছা করে। পাছে কেউ কোনো ক্রটি ধৱে ফেলে এই ভয় হয় ; লোকের কাছে এর অনিন্দনীয়তা প্রমাণ করে তোলবার জন্যে একটু বিশেষভাবে ঢাকাঢুকি দেবার আগ্রহ জন্মে। কেননা, এসব যে আমার অভ্যাস, আমার নেশা, আমার খাদ্য হয়ে উঠছে। এর থেকে যদি ঈশ্বর আমাকে একটু বঞ্চিত করতে চান, আমার সমস্ত প্রাণ ব্যাকুল হয়ে ওঠে। প্রতি দিনের অভ্যাসে বিদ্যালয় থেকে এই যে অংশটুকু নিজের ভাগেই সঞ্চয় করে তুলছি সেইটে সরিয়ে দাও দেখি, মনে হবে এর কোথাও যেন আর আশ্রয় পাচ্ছি নে । তখন ঈশ্বরকে আর আশ্রয় বলে মনে হবে না। এইজন্তে সঞ্চয়ীর পক্ষেই বড়ো শক্ত সমস্ত। সে ওই সঞ্চয়কেই চরম আশ্রয় বলে একেবারে অভ্যাস করে বসে আছে ; ঈশ্বরকে তাই সে চারি দিকে সত্য করে অনুভব করতে পারে না, শেষ পর্যন্তই সে নিজের সঞ্চয়কে অঁাকড়ে বসে থাকে। অনেক দিন থেকে অনেক সঞ্চয় করে যে বসেছি। সে-সমস্তর