পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* &е নদী ও কূল অমর আত্মার সঙ্গে এই মরণধর্মী অহংটা আলোর সঙ্গে ছায়ার মতে ষে নিয়তই লেগে রয়েছে। শিক্ষার দ্বার, অভ্যাসের দ্বারা, ঘটনাসংঘাতের দ্বারা, স্থানিক এবং সাময়িক নানা প্রভাবের দ্বারা, শরীর মন হৃদয়ের প্রকৃতিগত প্রবৃত্তির বেগের দ্বারা অহরহ নানা সংস্কার গড়ে তুলছে এবং কেবলই এই সংস্কার-দেহটির পরিবর্তন ঘটাচ্ছে, আমাদের আত্মার নামরূপময় একটি চিরচঞ্চল পরিবেষ্টন তৈরি করছে। এই অহংকে যদি একেবারে মিথ্যা মায়া বলে উড়িয়ে দিতে চেষ্টা করি তা হলেই সে যে ঘরে গিয়ে মরে থাকবে, এমন আশঙ্কা নেই। যেমন সংসারকে মনের ক্ষোভে মিথ্যা বললেই সে মিথ্যা হয় না, তেমমি এই অহংকে রাগ করে মিথ্যা অপবাদ দিলে তার তাতে ক্ষতিবৃদ্ধি ঘটে না। আত্মার সঙ্গে তার একটি সত্য সম্বন্ধ আছে সেইখানেই সে সত্য, সেই সম্বন্ধের বিকার ঘটলেই সে মিথ্যা। এই উপলক্ষ্যে আমি একটি উপমার অবতারণ করতে চাই । নদীর ধারাটা চিরন্তন। সে পর্বতের গুহ থেকে নিঃস্থত হয়ে । সমুদ্রের অতলের মধ্যে প্রবেশ করছে। সে যে ক্ষেত্রের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সেই ক্ষেত্র থেকে উপকরণরাশি তার গতিবেগে আহরিত হয়ে চর বেঁধে উঠছে— কোথাও কুড়ি, কোথাও বালি, কোথাও মাটি জমছে ; তার সঙ্গে নানা দেশের কত ধাতুকণা এবং জৈব পদার্থ এসে মিলছে। এই চর কতবার ভাঙছে, কতবার গড়ছে, কত স্থান ও আকার -পরিবর্তন করছে। এর কোথাও বা গাছপাল উঠছে, কোথাও বা মরুভূমি। কোথাও জলাশয়ে পাখি চরছে, কোথাও বা বালির উপর কুমিরের ছান। ই করে পড়ে রোজ পোয়াচ্ছে । এই চিরপরিবর্তনশীল চরগুলিই যদি একান্ত প্রবল হয়ে ওঠে ত৷