পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আত্মার প্রকাশ ૨૭ কোথায় থাকত ? যদি না ছেড়ে দিত তা হলেই বা কোথায় থাকত ? 曝 আত্মা দান করে এবং অহং সংগ্রহ করে, এই বৈপরীত্যের মধ্যে সামঞ্জস্য কোথায় সে কথার আলোচনা কাল করেছি। আত্মা দান করবে বলেই অহং সংগ্রহ করে, এইটেই হচ্ছে ওর সামঞ্জস্য । অহং সে কথা ভোলে ; সে মনে করে, সংগ্রহ করা ভোগেরই জন্তে । এই মিথ্যাকে যতই সে অঁাকড়ে ধরতে চায় এই মিথ্যা ততই তাকে দুঃখ দেয়, ফাকি দেয়। আত্মা তার অহংবৃক্ষে ফল ফলাবে বটে, কিন্তু ফল আত্মসাৎ করবে না, দান করবে। আমাদের জীবনের সাধনা এই যে, অহং-এর দ্বারা আমরা আত্মাকে প্রকাশ করব। যখন তা না ক’রে ধনকে মানকে বিদ্যাকেই প্রকাশ করতে চাই তখন অহং নিজেকেই প্রকাশ করে, আত্মাকে প্রকাশ করে না । তখন ভাষা নিজের বাহাদুরি দেখাতে চায়, ভাব স্নান হয়ে যায়। যারা সাধুপুরুষ তাদের অহং চোখেই পড়ে না, তাদের আত্মাকেই দেখি । সেইজন্যে র্তাদের মহাধনী মহামানী মহাবিদ্বান বলি নে— তাদের মহাত্মা বলি । তাদের জীবনে আত্মারই প্রকাশ, সুতরাং তাদের জীবন সার্থক। তাদের অহং আত্মাকে মুক্তই করছে, বাধাগ্রস্ত করছে না। এইজন্যেই আমাদের প্রার্থন যে, আমরা যেন এই মানবজীবনে সত্যকেই প্রকাশ করি, অসত্যকে নিয়েই দিনরাত ব্যস্ত হয়ে না থাকি । আমরা যেন প্রবৃত্তির অন্ধকারের মধ্যেই আত্মাকে আচ্ছন্ন করে না রাখি, আত্মা যেন এই ঘোর অন্ধকারে আপনাকে আপনি না হারায়, মোহমুক্ত নির্মল জ্যোতিতে আপনাকে আপনি উপলব্ধি করে, সে যেন নানা অনিত্য উপকরণের সঞ্চয়ের মধ্যে পদে পদে আঘাত খেতে খেতে হাংড়ে না বেড়ায়, সে যেন আপনার অমৃতরূপকে আনন্দরূপকে তোমার মধ্যে লাভ করে । হে স্বপ্রকাশ, আত্মা যেন নিজের সকল প্রকাশের