পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ব্রহ্মবিহার ՀՊ7) প্রতি মাতার যে প্রেম সেই প্রেম যে তার সর্বত্র । তারই সেই মানসের সঙ্গে মানস, প্রেমের সঙ্গে প্রেম না মেশালে সে তো ব্রহ্মবিহার হল না। কথাটা খুব বড়ো। কিন্তু, বড়ো কথাই যে হচ্ছে, বড়ো কথাকে ছোটো কথা করে তো লাভ নেই। ব্ৰহ্মকে চাওয়াই যে সকলের চেয়ে বড়োকে চাওয়া। উপনিষৎ বলেছেন : ভূম ত্বেব বিজিজ্ঞাসিতব্যঃ । ভূমাকেই, সকলের চেয়ে বড়োকেই, জানতে চাইবে । সেই চাওয়া সেই পাওয়ার রূপটা কী সে তো স্পষ্ট করে পরিষ্কার করে সম্মুখে ধরতে হবে। ভগবান বুদ্ধ ব্রহ্মবিহারকে স্বম্পষ্ট করে ধরেছেন— তাকে ছোটো ক’রে ঝাপসা ক’রে সকলের কাছে চলনসই করবার চেষ্টা করেন নি । অপরিমিত মানসে অপরিমিত মৈত্রীকে সর্বত্র প্রসারিত করে দিলে ব্রহ্মের বিহারক্ষেত্রে ব্রহ্মের সঙ্গে মিলন হয় । এই তো হল লক্ষ্য। কিন্তু, এ তো আমরা একেবারে পারব না। এই দিকে আমাদের প্রত্যহ চলতে হবে। এই লক্ষ্যের সঙ্গে তুলনা করে প্রত্যহ বুঝতে পারব আমরা কতদূর অগ্রসর হলুম। ঈশ্বরের প্রতি আমার প্রেম জন্মাচ্ছে কি না সে সম্বন্ধে আমরা নিজেকে নিজে ভোলাতে পারি। কিন্তু, সকলের প্রতি আমার প্রেম বিস্তৃত হচ্ছে কি না, আমার শক্রতা ক্ষয় হচ্ছে কি না, আমার মঙ্গলভাব বাড়ছে কি না তার পরিমাণ স্থির করা শক্ত নয় । একটা-কোনো নির্দিষ্ট সাধনার স্বম্পষ্ট পথ পাবার জন্তে মানুষের একটা ব্যাকুলত আছে। বুদ্ধদেব এক দিকে উদ্দেশুকে যেমন খর্ব করেন নি তেমনি তিনি পথকেও খুব নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। কেমন করে ভাবতে হবে এবং কেমন করে চলতে হবে তা তিনি খুব স্পষ্ট করে বলেছেন। প্রত্যহ শীলসাধনী-দ্বারা তিনি আত্মাক্ষে মোহ থেকে মুক্ত করতে উপদেশ দিয়েছেন এবং মৈত্রীভাবনা-স্বাক্ষ আত্মাকে ব্যাপ্ত