পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

さbr8 鹹 শান্তিনিকেতন হতে পারবে ততক্ষণ ভাষায় শিশুর কোনো অধিকার থাকবে না, ততক্ষণ তাকে কথা শুনতে বা পড়তে দেওয়া হবে না, এবং সে কথা বলতেও পারবে না— তা হলে ভাষাশিক্ষা তার পক্ষে যে কেবল কষ্টকর হবে তা নয়, তার পক্ষে অসাধ্য হয়ে উঠবে। শিশু মুখে মুখে যে ভাষা গ্রহণ করছে, ব্যাকরণের ভিতর দিয়ে তাকেই আবার তাকে শিখে নিতে হবে, সেটাকে সর্বত্র পাকা করে নিতে হবে, কেবল সাধারণভাবে, মোটামুটি কাজ চালাবার জন্যে নয়— তাকে গভীরতর, উচ্চতর, ব্যাপকতর ভাবে শোনা বলা ও লেখায় ব্যবহার করবার উপযোগী করতে হবে ব’লে রীতিমত চর্চার দ্বারা শিক্ষা করতে হবে । এক দিকে পাওয়া, আর-এক দিকে শেখা ৷ পাওয়াটা মুখের থেকে মুখে, প্রাণের থেকে প্রাণে, ভাবের থেকে ভাবে। আর, শেখাটা নিয়মে, কর্মে ; সেটা ক্রমে ক্রমে, পদে পদে । এই পাওয়া এবং শেখা দুটােই যদি পাশাপাশি না চলে, তা হলে হয় পাওয়াটা কাচা হয় নয় শেখাটা নীরস ব্যর্থ হতে থাকে। বুদ্ধদেব কঠোর শিক্ষকের মতো দুর্বল মানুষকে বলেছিলেন, ‘এরা ভারী ভুল করে, কাকে কী বোঝে, কাকে কী বলে তার কিছুই ঠিক নেই। তার একমাত্র কারণ এরা শেখবার পূর্বেই পাবার কথা তোলে। অতএব আগে এরা শিক্ষাটা সমাধা করুক, তা হলে যথাসময়ে পাবার জিনিসটা এর আপনিই পাবে— আগে-ভাগে চরম কথাটার কোনো উত্থাপনমাত্র এদের কাছে করা হবে না।’ কিন্তু, ওই চরম কথাটি কেবল যে গম্য স্থান তা তো নয়, ওটা যে পাথেয়ও বটে। ওটি কেবল স্থিতি দেবে তা নয়, ও যে গতিও দেবে। অতএব, আমরা যতই ভুল করি, যাই করি, কেবলমাত্র ব্যাকরণশিক্ষার কখ। মানতে পারব না। কেবল পাঠশালায় শিক্ষকের কাছেই শিখব এ চলবে না, মার কাছেও শিক্ষা পাব।