পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীড়ের শিক্ষা &护念 মার কাছে যা পাই তার মধ্যে অনেক শক্ত নিয়ম অজ্ঞাতসারে আপনি অস্তঃসাং হয়ে থাকে, সেই স্থযোগটুকু কি ছাড়া যায় ? পক্ষীশাবককে একদিন চ’রে খেতে হবে সন্দেহ নেই, একদিন তাকে নিজের ডানা বিস্তার করে উড়তে হবে। কিন্তু, ইতিমধ্যে মার মুখ থেকে সে খাবার খায়। যদি তাকে বলি ‘ষেপর্যন্ত না চরে খাবার শক্তি সম্পূর্ণ হবে সেপর্যন্ত খেতেই পাবে না, তা হলে সে ষে শুকিয়ে মরে যাবে। আমরা যতদিন অশক্ত আছি ততদিন যেমন অল্প অল্প করে শক্তির চর্চা করব তেমন প্রতিদিন ঈশ্বরের প্রসাদের জন্তে ক্ষুধিত চঞ্চুপুট মেলতে হবে ; তার কাছ থেকে সহজ কৃপার দৈনিক খাদ্যটুকু পাবার জন্ত ব্যাকুল হয়ে কলরব করতে হবে। এ ছাড়া উপায় দেখি নে । এখন তো অনন্তে ওড়বার ডানা পাকা হয় নি, এখন তো নীড়েই পড়ে আছি। ছোটোখাটো কুটোকাটা দিয়ে যে সামান্য বাসা তৈরি হয়েছে এই আমার আশ্রয়। এই আশ্রয়ের মধ্যে বদ্ধ থেকেই অনস্ত আকাশ হতে আহরিত খাদ্যের প্রত্যাশা যদি আমাদের একেবারেই ছেড়ে দিতে হয়, তা হলে আমাদের কী দশা হবে ? তুমি বলতে পার, ওই খাদ্যের দিকেই যদি তুমি তাকিয়ে থাক ত৷ হলে চিরদিন নিশ্চেষ্ট হয়েই থাকবে, নিজের শক্তির পরিচয় পাবে না।’ সে শক্তিকে যে একেবারে চালনা করব না সে কথা বলি নে । ওড়বার প্রয়াসে দুর্বল পাখা আন্দোলন করে তাকে শক্ত করে তুলতে হবে। কিন্তু, কুপার খাদ্যটুকু, প্রেমের পুষ্টিটুকু, প্রতিদিনই সঙ্গে সঙ্গে চাই । সেটি যদি নিয়মিত লাভ করি তা হলে যখনই পুরোপুরি বল পাব তখন নীড়ে ধরে রাখে এমন সাধ্য কার? দ্বিজশাবকের স্বাভাবিক ধর্মই ষে অনন্ত আকাশে ওড়া। তখন নিজের প্রকৃতির গরজেই সে ংসারনীড়ে বাস করবে বটে, কিন্তু অনন্ত আকাশে বিহার করন্থে। ।