পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

、○b" শান্তিনিকেতন আমরা বরং এই কথাই বলি যে, যাতে স্বাভাবিক স্বখেই মাতালের অকুরাগ জন্মে সেই চেষ্টাই উচিত। যাতে বই পড়তে ভালো লাগে, যাতে লোকজনের সঙ্গে সহজে মিশে ওর মুখ হয়, যাতে প্রাত্যহিক কাজকর্মে ওর মন সহজে নিবিষ্ট হয়, সেই পথই অবলম্বন করা কর্তব্য । যাতে একমাত্র মদের সংকীর্ণ উত্তেজনায় ওর চিত্ত আসক্ত না থেকে জীবনের বৃহৎ স্বভাবক্ষেত্রে সহজভাবে ব্যাপ্ত হয় সেইটে করাই মঙ্গল । ভগবানের ধারণাকে একটা সংকীর্ণতার মধ্যে বেঁধে ভক্তির উত্তেজনাকে উগ্র নেশার মতো করে তোলাই যে মনুষ্যত্বের সার্থকতা, এ কথা বলা চলে না । ভগবানকেও তার স্বভাবে পাবার সাধনা করতে হবে, তা হলেই সেটা সত্য সাধনা হবে— তাকে আমাদের নিজের কোনো বিকৃতির উপযোগী করে নিয়ে তাকে নিয়ে মাতামাতি করাকেই আমরা মঙ্গল বলতে পারব না। তার মধ্যে একটা কোথাও সত্য-চুরি আছে। তার মধ্যে এমন একটা অসামঞ্জস্য আছে যে, যে ক্ষেত্রে তার আবির্ভাব সেখানে মোহকে আর ঠেকিয়ে রাখা যায় না। যিনি শক্ত লোক তিনি মদ সহ করতে পারেন, তার পক্ষে একরকম চলে যায়, কিন্তু র্তার দলে এসে যারা জমে তাদের আর কিছুই ঠিক-ঠিকানা থাকে না— তাদের আলাপ ক্রমেই প্রলাপ হয়ে ওঠে এবং উত্তেজনা উন্মাদনার পথে অপঘাত মৃত্যু লাভ করে। ১৬ চৈত্র অখণ্ড পাওয়া ব্ৰহ্মকে পেতে হবে। কিন্তু, পাওয়া কাকে বলে ? সংসারে আমরা অশন-বসন জিনিস-পত্র প্রতিদিন কত কী পেয়ে এসেছি। পেতে হবে বললে মনে হয়, তবে তেমনি করেই পেতে হবে।