পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

49a R শান্তিনিকেতন অতএব, আমরা যেন না বলি যে ‘র্তাকে পাচ্ছি নে কেন, আমরা যেন বলতে পারি ‘র্তাকে দিচ্ছি নে কেন । আমাদের প্রতিদিনের আক্ষেপ হচ্ছে এই ষে— আমার যা আছে আমি সকল দিতে পারি নি তোমারে নাথ । আমার লাজ ভয়, আমার মান অপমান মুখ দুখ ভাবন।। দাও দাও দাও, সমস্ত ক্ষয় করে, সমস্ত খরচ করে ফেলো— তা হলেই পাওয়াতে একেবারে পূর্ণ হয়ে উঠবে। মাঝে রয়েছে আবরণ কত শত, কতমত— তাই কেঁদে ফিরি, তাই তোমারে না পাই, মনে থেকে যায় তাই হে মনের বেদন । আমাদের যত দুঃখ যত বেদন সে কেবল আপনাকে ঘোচাতে পারছি নে ব’লেই ; সেইটে ঘুচলেই যে তৎক্ষণাৎ দেখতে পাব, আমার সকল পাওয়াকে চিরকালই পেয়ে বসে আছি। উপনিষৎ বলেছেন : ব্রহ্ম তল্লক্ষ্যমুচ্যতে। ব্রহ্মকেই লক্ষ্য বলা হয়। এই লক্ষ্যটি কিসের জন্তে ? কিছুকে আহরণ করে নিজের দিকে টানবার জন্যে নয়, নিজেকে একেবারে হারাবার জন্যে। শরবং তন্ময়ো ভবেৎ । শর যেমন লক্ষ্যের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রবেশ করে তন্ময় হয়ে যায় তেমনি করে র্তার মধ্যে একেবারে আচ্ছন্ন হয়ে যেতে হবে । - এই তন্ময় হয়ে যাওয়াটা কেবল যে একটা ধ্যানের ব্যাপার, অা তা মনে করি নে। এটা হচ্ছে সমস্ত জীবনেরই ব্যাপার। সকল অবস্থায়, সকল চিস্তায়, সকল কাজে এই উপলব্ধি যেন মনের এক জায়গায় খাকে যে, আমি তার মধ্যেই আছি, কোথাও বিচ্ছেদ নেই। এই জ্ঞানটি যেন মনের মধ্যে প্রতিদিনই ক্রমে ক্রমে একান্ত সহজ হয়ে আসে