পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩২৬ শাস্তিনিকেতন অর্থাৎ, পিতার মধ্যে মাতার স্নেহ আছে, কিন্তু সে স্নেহ সংকীর্ণ সীমায় বদ্ধ ময় বলেই তাকে অতিপ্রকট করে দেখা যায় না এবং তাকে নিয়ে যেমন ইচ্ছা খেলা চলে না । সেইজন্যে পিতাকে নমস্কার করবার সময় বলা হয়েছে : নমঃ সম্ভবায় চ ময়োভবায় চ। যিনি সুখকর তাকে নমস্কার, যিনি কল্যাণকর তাকে নমস্কার । পিতা কেবল আমাদের মুখের আয়োজন করেন না, তিনি মঙ্গলের বিধান করেন । সেইজন্যেই সুখেও তাকে নমস্কার, দুঃখেও তাকে নমস্কার। ওইখানেই পিতার পূর্ণতা ; তিনি দুঃখ দেন। উপনিষৎ এক দিকে বলেছেন : আনন্দাদ্ধোব খদ্বিমানি ভূতানি জায়স্তে । আনন্দ হতেই যা-কিছু সমস্ত জন্মেছে। আবার আর-এক দিকে বলেছেন : ভয়াদস্তাগ্নিস্তপতি ভয়াত্তপতি সুর্যঃ । ইহার ভয়ে অগ্নি জলছে, ইহার ভয়ে সূর্য তাপ দিচ্ছে। র্তার আনন্দ উচ্ছৃঙ্খল আনন্দ নয়, তার মধ্যে একটি অমোঘ নিয়মের শাসন আছে । অনন্ত দেশে অনস্ত কালে কোথাও একটি কণাও লেশমাত্র ভ্ৰষ্ট হতে পারে না। সেই অমোঘ নিয়মই হচ্ছে ভয় । তার সঙ্গে কিছুমাত্র চাতুরী খাটে না, সে কোথাও কাউকে তিলমাত্র প্রশ্রয় দেয় না । 轟 যদিদং কিঞ্চ জগৎ সর্বং প্রাণ এজতি নিঃস্থতং মহম্ভয়ং বজ্ৰমুদ্যতম্। এই যা-কিছু জগৎ সমস্তই প্রাণ হতে নিঃস্থত হয়ে প্রাণেই কম্পিত হচ্ছে —সেই-ষে প্রাণ যার থেকে সমস্ত উদ্ভূত হয়েছে এবং যার মধ্যে সমস্তই চলছে তিনি কিরকম ? না, তিনি উদ্যত বজের মতো মহাভয়ংকর। সেইজন্যেই তো সমস্ত চলছে ; নইলে বিশ্বব্যবস্থা উন্মত্ত প্রলাপের মতো অতি নিদারুণ হয়ে উঠত। অামাদের পিতা যে, ভয়ানাং ভয়ং ভীষণং ভীষণানাম্। এই ভয়ের দ্বারাই অনাদি কাল থেকে সর্বত্র সকলের