পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\9\9b শাস্তিনিকেতন কত রকম প্রতিকারের আশ্চর্য ব্যবস্থা করছে তা আমরা জানিই নে এবং আরোগের সময় সমস্ত শরীরের মধ্যে বিচিত্র ক্রিয়ার সামঞ্জস্য-স্থাপনার জন্তে তার কৌশলের অস্ত নেই– তারও কোনো খবর সে আমাদের জানায় না। এই স্বাস্থ্যের ইচ্ছাটি শরীরের মূলে আমাদের চেতনার অগোচরে রাত্রিদিন নিদ্রায় জাগরণে অবিশ্রাম বিরাজ করছে। শরীর সম্বন্ধে যে ব্যক্তি জ্ঞানী তিনি এইটিকেই জানেন। তিনি জানেন আমাদের মধ্যে একটি স্বাস্থ্যতত্ত্ব আছে। শরীরের এই মূল অব্যক্ত ইচ্ছাটিকে যিনি জেনেছেন তিনি শরীরগত সমস্ত ব্যক্ত ইচ্ছাকে এর অনুগত করে তোলেন। ব্যক্ত ইচ্ছ। যখন খাব ব’লে আবদার করছে তখন তাকে তিনি এই অব্যক্ত স্বাস্থ্যের ইচ্ছারই শাসনে নিয়মিত করবার চেষ্টা করেন। শরীর সম্বন্ধে এইটেই হচ্ছে সাধনা। পাচ জনের সঙ্গে মিলে আমরা যে একটা সামাজিক শরীর রচনা করে আছি, তার মধ্যেও ব্যক্ত এবং অব্যক্ত ইচ্ছা আছে। সমাজের প্রত্যেকের নিজের স্বার্থ সুবিধা সুখ ও স্বাধীনতার জন্যে যে ইচ্ছা এইটেই তার ব্যক্ত ইচ্ছা। সকলেই বেশি পেতে চাচ্ছে, সকলেই জিততে চাচ্ছে, যত কম মূল্য দিয়ে যত বেশি পরিমাণ আদায় করতে পারে এই সকলের ইচ্ছ। এই ইচ্ছার সংঘাতে কত ফাকি, কত যুদ্ধ, কত দলাদলি চলছে তার আর সীমা নেই। কিন্তু, এরই মধ্যে একটি অব্যক্ত ইচ্ছা ধ্রুব হয়ে আছে। তাকে প্রত্যক্ষ দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু সে আছেই, না থাকলে কোনোমতেই সমাজ রক্ষা পেত না— সে হচ্ছে মঙ্গলের ইচ্ছা। অর্থাৎ, সমস্ত সমাজের মুখ হোক, ভালো হোক, এই ইচ্ছা প্রত্যেকের মধ্যে নিগৃঢ়ভাবেই আছে । এই থাকার উপরেই সমাজ বেঁধে উঠেছে, কোনো প্রত্যক্ষ স্ববিধার উপরে নয়। সমাজ সম্বন্ধে যারা জ্ঞানী তারা এইটেই জেনেছেন। তারা সমুদয়