পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\98 o শান্তিনিকেতন ইচ্ছা তার সমস্ত ইচ্ছার ভিতরে নিরস্তর জাগ্রত হয়ে রয়েছে । শরীরের মধ্যে এই স্বাস্থ্যের শাস্তি, সমাজের মধ্যে মঙ্গল এবং আত্মার মধ্যে অদ্বিতীয়ের প্রেম, ইচ্ছারূপে বিরাজ করছে। এই ইচ্ছ। আনস্তের ইচ্ছা, ব্রহ্মের ইচ্ছা । তার এই ইচ্ছার সঙ্গে আমাদের সচেতন ইচ্ছাকে সংগত করে দেওয়াই আমাদের মুক্তি। এই ইচ্ছার সঙ্গে অসামঞ্জস্যই আমাদের বন্ধন, আমাদের দুঃখ । ব্রহ্মের যে ইচ্ছা আমাদের মধ্যে আছে সে আমাদের , দেশকালের বাইরের দিকে নিয়ে যাবার ইচ্ছা, কোনো বর্তমানের বিশেষ স্বাৰ্থ বা মুখের মধ্যে আবদ্ধ করবার ইচ্ছা নয়। সে ইচ্ছা কিনা তার প্রেম, এইজন্যে সে তারই দিকে আমাদের টানছে । এই অনন্ত প্রেম যা আমাদের মধ্যেই অাছে তার সঙ্গে আমাদের প্রেমকে যোগ করে দিয়ে আমাদের আনন্দকে বাধামুক্ত করে দেওয়াই আমাদের সাধনা। কী শরীরে, কী সমাজে, কী আত্মায়, সর্বত্রই আমরা এই-যে দুটি ইচ্ছার ধারাকে দেখতে পাচ্ছি— একটি আমাদের গোচর অথচ চিরপরিবর্তনশীল, আর-একটি আমাদের অগোচর অথচ চিরন্তন— একটি কেবল বর্তমানের প্রতিই আকৃষ্ট, আরএকটি অনাগতের দিকে আকর্ষণকারী— একটি কেবল ব্যক্তিবিশেষের মধ্যেই বদ্ধ, আর-একটি নিখিলের সঙ্গে যোগযুক্ত— এই দুটি ইচ্ছার গতি নিরীক্ষণ করো, এর তাৎপর্ষ গ্রহণ করো। এদের উভয়ের মধ্যে মিলিত হবার যে একটা তত্ত্ব বিরোধের দ্বারাই নিজেকে ব্যক্ত করছে, সেইটি উপলব্ধি ক’রে এই মিলনের জন্তেই সমস্ত জীবন প্রতিদিনই আপনাকে প্রস্তুত করে । ৩ বৈশাখ