পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাওয়া ও না-পাওয়া \Ց8\9 আছে। পাখি যেমন করে জানে ‘আমি আকাশ পার হতে পারলুম না, তেমনি করে জানা চাই। পাখি আকাশকে জানে ব’লেই সে জানে ষে আকাশ পার হওয়া গেল না। আকাশ পার হওয়া গেল না জানে বলেই তার আনন্দ ; এইজন্তেই সে আকাশে উড়ে বেড়ায় । কোনো প্রাপ্তি নয়, কোনো সমাপ্তি নয়, কোনো প্রয়োজন নয়, কিন্তু উড়েই তার योंन्धना । পাখি আকাশকে জানে বলেই সে জানে ‘আমি আকাশকে শেষ করে জানলুম না’ এবং এই জেনে না-জানাতেই তার আনন্দ– ব্রহ্মকে জানার কথাতেও এই কথাটাই খাটে। সেইজন্যেই উপনিষৎ বলেন : নাহং মন্তে স্ববেদেতি নো ন বেদেতি বেদ চ । আমি যে ব্রন্ধকে বেশ জেনেছি এও নয়, আমি যে একেবারে জানি নে এও নয়। কেউ কেউ বলেন, “আমরা ব্ৰহ্মকে একেবারেই জানতে চাই, যেমন করে এই-সমস্ত জিনিসপত্র জানি, নইলে আমার কিছুই হল না।’ আমি বলছি, আমরা তা চাই নে। যদি চাইতুম তা হলে সংসারই আমাদের পক্ষে যথেষ্ট ছিল। এখানে জিনিসপত্রের অস্ত কোথায় ? এর উপরে আবার কেন ? নীড়ের পাখি যেমন আকাশকে চায় তেমনি আমরা এমন-কিছুকে চাই যাকে পাওয়া যায় না। আমার মনে আছে, যারা ব্রহ্মকে চান তাদের প্রতি বিদ্রুপ প্রকাশ করে একজন পণ্ডিত অনেক দিন হল বলেছিলেন— একদল গাজাখোর রাত্রে গাজ খাবার সভা করেছিল। টিকাধরাবার আগুন ফুরিয়ে যাওয়াতে তারা সংকটে পড়েছিল। তখন রক্তবর্ণ হয়ে চাদ আকাশে উঠছিল। একজন বললে, “ওই-ষে ওই আলোতে টিকা ধরাব ।’ ব’লে টিকা নিয়ে জানালার কাছে দাড়িয়ে চাদের,অভিমুখে বাড়িয়ে ধরলে। টিকা ধরল না। তখন আর-একজন বললে, ‘দুর ! চাদ বুঝি অত কাছে! দে আমাকে দে।" বলে সে আরও কিছু দূরে