পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"రి(t e শান্তিনিকেতন ও সংস্কারের দ্বারা আমরা সত্যকে অবরুদ্ধ করেছি, সেইজন্যে তাতে আমরা আনন্দ পাচ্ছি নে । বৈজ্ঞানিক বলে, দার্শনিক বলো, কবি বলো, তাদের কাজই মানুষের এই-সমস্ত মূঢ়তা ও অভ্যাসের আবরণ মোচন করে এই জগতের মধ্যে সত্যের অনস্তরূপকে দেখানে, যা-কিছু দেখছি একেই সত্য করে দেখানে— নৃতন কিছু তৈরি করা নয়, কল্পনা করা নয়। এই সত্যকে মুক্ত করে দেখানোর মানেই হচ্ছে মানুষের আনন্দের অধিকার বাড়িয়ে দেওয়া । যেমন ঘর ছেড়ে দিয়ে কোনো দূর দেশে যাওয়াকে অন্ধকারমুক্তি বলে না, ঘরের দরজাকে খুলে দেওয়াই বলে অন্ধকার-মোচন ; তেমনি জগৎসংসারকে ত্যাগ করাই মুক্তি নয়— পাপ স্বার্থ অহংকার জড়তা মৃঢ়তা ও সংস্কারের বন্ধন কাটিয়ে, যা দেখছি একেই সত্য করে দেখা, যা করছি একেই সত্য করে করা, যার মধ্যে আছি এরই মধ্যে সত্য করে থাকাই মুক্তি। যদি এই কথাই সত্য হয় যে ব্রহ্ম কেবল আপনার অব্যক্তস্বরূপেই আনন্দিত, তা হলে তার সেই অব্যক্তস্বরূপের মধ্যে বিলীন না হলে নিরানন্দের হাত থেকে আমাদের কোনোক্রমেই নিস্তার থাকত না । কিন্তু তা তো নয়, প্রকাশেই যে তার আনন্দ । নইলে এই জগৎ তিনি প্রকাশ করলেন কেন ? বাইরে থেকে কোনো প্রকাণ্ড পীড়া জোর করে তাকে প্রকাশ করিয়েছে ? মায়া-নামক কোনো-একটা পদার্থ ব্রহ্মকে একেবারে অভিভূত করে নিজেকে প্রকাশমান করেছে ? সে তো হতেই পারে না। তাই উপনিষৎ বলেছেন : আনন্দরূপমমৃতং খদবিভাতি। এই-ষে প্রকাশমান জগৎ এ আর কিছু নয়, তার মৃত্যুহীন আনন্দই রূপধারণ করে প্রকাশ পাচ্ছে। আনন্দই তার প্রকাশ, প্রকাশেই র্তার আনন্দ ।