পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপোবন બન્ય তপোবনের মিলন হচ্ছে তাই । আমাদের কবির সকলেই বলেছেন, তপোবন শাস্তরসাম্পদ । তপোবনের যে-একটি বিশেষ রস আছে সেটি শাস্তরস। শাস্তরস হচ্ছে পরিপূর্ণতার রস। যেমন সাতটা বর্ণরশ্মি মিলে গেলে তবে সাদা রঙ হয় তেমনি চিত্তের প্রবাহ নানা ভাগে বিভক্ত না হয়ে যখন অবিচ্ছিন্নভাবে নিখিলের সঙ্গে আপনার সামঞ্জস্যকে একেবারে কানায় কানায় ভরে তোলে তখনই শান্তরসের উদ্ভব হয়। তপোবনে সেই শান্তরস। এখানে স্বৰ্ধ-অগ্নি বায়ুজল স্থল-আকাশ তরুলতা মৃগপক্ষী সকলের সঙ্গেই চেতনার একটি পরিপূর্ণ যোগ । এখানে চতুর্দিকের কিছুর সঙ্গেই মানুষের বিচ্ছেদ নেই এবং বিরোধ নেই। . o ভারতবর্ষের তপোবনে এই-ষে একটি শাস্তরসের সংগীত বাধা হয়েছিল এই সংগীতের আদর্শেই আমাদের দেশে অনেক মিশ্র রাগরাগিণীর স্বষ্টি হয়েছে। সেইজন্যেই আমাদের কাব্যে মানব-ব্যাপারের মাঝখানে প্রকৃতিকে এত বড়ো স্থান দেওয়া হয়েছে। এ কেবল সম্পূর্ণতার জন্যে আমাদের যে-একটি স্বাভাবিক আকাঙ্ক্ষা আছে সেই আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করবার উদ্দেশে । অভিজ্ঞানশকুন্তল নাটকে যে দুটি তপোবন আছে সে দুটিই শকুন্তলার স্বখদুঃখকে একটি বিশালতার মধ্যে সম্পূর্ণ করে দিয়েছে। তার একটি তপোবন পৃথিবীতে, আর একটি স্বৰ্গলোকের সীমায়। একটি তপোবনে সহকারের সঙ্গে নবমন্ত্রিকার মিলনোৎসবে নবযৌবনা ঋষিকস্তারা পুলকিত হয়ে উঠছেন ; মাতৃহীন মৃগশিশুকে র্তার নীবারমুষ্টি দিয়ে পালন করছেন, কুশস্থচিতে তার মূখ বিদ্ধ হলে ইঙ্গুলীতৈল মাখিয়ে শুশ্ৰুষা করছেন। এই তপোবনটি স্বস্তম্ভশকুন্তলার প্রেমকে সারল্য সৌন্দর্ব এবং স্বাভাবিকতা দান করে তাঁকে বিশ্বক্ষরের