পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপোবন \לס"* ‘রমণীয় এই গিরিকে দেখে রাজ্যভ্রংশনও আমাকে দুঃখ দিচ্ছে না, স্বহৃদগণের কাছ থেকে দূরে বাসও আমার পীড়ার কারণ হচ্ছে না।’ সেখান থেকে রাম যখন দণ্ডকারণ্যে গেলেন সেখানে গগনে সুর্যমগুলের মতো দুর্দশ প্রদীপ্ত তাপসাশ্রমণ্ডল দেখতে পেলেন। এই আশ্রম শরণাং সর্বভূতানাম । ইহা ব্রাহ্মী লক্ষ্মী দ্বারা সমাবৃত। কুটিরগুলি সুমার্জিত ; চারি দিকে কত মৃগ, কত পক্ষী । রামের বনবাস এমনি করেই কেটেছিল— কোথাও বা রমণীয় বনে, কোথাও বা পবিত্র তপোবনে । রামের প্রতি সীতার ও সীতার প্রতি রামের প্রেম তাদের পরম্পর থেকে প্রতিফলিত হয়ে চারি দিকের মৃগপক্ষীকে আচ্ছন্ন করেছিল। র্তাদের প্রেমের যোগে তারা কেবল নিজেদের সঙ্গে নয়, বিশ্বলোকের সঙ্গে যোগযুক্ত হয়েছিলেন। এইজন্য সীতাহরণের পর রাম সমস্ত অরণ্যকেই আপনার বিচ্ছেদবেদনার সহচর পেয়েছিলেন। সীতার অভাব কেবল রামের পক্ষে নয়—সমস্ত অরণ্যই যে সীতাকে হারিয়েছে। কারণ, রামসীতার বনবাসকালে অরণ্য একটি নূতন সম্পদ পেয়েছিল— সেটি হচ্ছে মাতুষের প্রেম। সেই প্রেমে তার পল্লবঘন স্যামলতাকে, তার ছায়াগম্ভীর গহনতার রহস্যকে, একটি চেতনার সঞ্চারে রোমাঞ্চিত করে তুলেছিল। শেক্সপীয়রের As You Like It নাটক একটি বনবাসকাহিনী— Tempest's wiè, Midsummer Night's Dream's Tootso কাব্য। কিন্তু, সে-সকল কাব্যে মানুষের প্রভুত্ব ও প্রবৃত্তির লীলাই একেবারে একান্ত ; অরণ্যের সঙ্গে সৌহার্দ্য দেখতে পাই নে। অরণ্যবাসের সঙ্গে মানুষের চিত্তের সামঞ্জস্তসাধন ঘটে নি। হয় তাকে জয় করবার নয় তাকে ত্যাগ করবার চেষ্টা সর্বদাই রয়েছে ; হয় বিরোধ নয় । বিরাগ নয় ঔদাসীন্য। মাহুষের প্রকৃতি বিশ্বপ্রকৃতিকে ঠেলেক্ট্রলে স্বতন্ত্র