পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

❖ህም শান্তিনিকেতন হয়ে উঠে আপনার গৌরব প্রকাশ করেছে। মিন্টনের Paradise Lost কাব্যে আদিমানবদম্পতির স্বর্গারণ্যে বাস বিষয়টিই এমন যে, অতি সহজেই সেই কাব্যে মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির মিলনটি সরল প্রেমের সম্বন্ধে বিরাট ও মধুর হয়ে প্রকাশ পাবার কথা। কবি প্রকৃতিসৌন্দর্যের বর্ণনা করেছেন, জীবজন্তুর সেখানে হিংসা পরিত্যাগ করে একত্রে বাস করছে তাও বলেছেন, কিন্তু মানুষের সঙ্গে তাদের কোনো সাত্ত্বিক সম্বন্ধ নেই। তারা মানুষের ভোগের জন্যেই বিশেষ করে স্বষ্ট, মানুষ তাদের প্রভু। এমন আভাসটি কোথাও পাই নে যে এই আদিদম্পতি প্রেমের আনন্দ-প্রাচুর্যে তরুলতাপশুপক্ষীর সেবা করছেন, ভাবনাকে কল্পনাকে নদীগিরি-অরণ্যের সঙ্গে নানা লীলায় সম্মিলিত করে তুলছেন। এই স্বর্গারণ্যের যে নিভৃত নিকুঞ্জটিতে মানবের প্রথম পিতামাতা বিশ্রাম করতেন সেখানে— Beast, bird, insect or worm durst enter none ; Such was their awe of man ... ... অর্থাৎ, পশু পক্ষী কীট পতঙ্গ কেউ প্রবেশ করতে সাহস করত না, মানুষের প্রতি এমনি তাদের একটি সভয় সন্ত্রম ছিল । এই-যে নিখিলের সঙ্গে মানুষের বিচ্ছেদ, এর মূলে একটি গভীরতর বিচ্ছেদের কথা আছে। এর মধ্যে— ঈশাবাস্তমিদং সৰ্বং যৎ কিঞ্চ জগত্যাং জগৎ– জগতে যা-কিছু আছে সমস্তকেই ঈশ্বরের দ্বারা সমাবৃত করে জানবে, এই বাণীটির অভাব আছে। এই পাশ্চাত্য কাব্যে ঈশ্বরের স্বষ্টি ঈশ্বরের যশোকীর্তন করবার জন্যেই ; ঈশ্বর স্বয়ং দূরে থেকে তার এই বিশ্বরচনা থেকে বন্দনা গ্রহণ করছেন। 鸭 মানুষের সঙ্গেও আংশিক পরিমাণে প্রকৃতির সেই সম্বন্ধ প্রকাশ পেয়েছে, অর্থাৎ প্রকৃতি মানুষের শ্রেষ্ঠতা-প্রচারের জন্যে। ভারতবর্ষও যে মানুষের শ্রেষ্ঠত অস্বীকার করে তা নয়। কিন্তু