পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপোবন \02 & পরিষ্কার করে দিতে হয়। যা নিকটে আছে ব’লে বড়ো এবং দূরে আছে ব’লে ছোটো, যা বাইরে অাছে ব’লেই প্রত্যক্ষ এবং ভিতরে আছে ব’লেই প্রচ্ছন্ন, যা বিচ্ছিন্ন করে দেখলে নিরর্থক— সংযুক্ত করে দেখলেই সার্থক— তাকে তার যাথার্থ্য রক্ষা করে দেখবার শিক্ষা দিতে হয়। বোধের তপস্যার বাধা হচ্ছে রিপুর বাধা। প্রবৃত্তি অসংযত হয়ে উঠলে চিত্তের সাম্য থাকে না, সুতরাং বোধ বিকৃত হয়ে যায়। কামনার জিনিসকে আমরা শ্রেয় দেখি— সে জিনিসটা সত্যই শ্রেয় বলে নয়, আমাদের কামনা আছে বলেই। লোভের জিনিসকে আমরা বড়ো দেখি– সে জিনিসটা সত্যই বড়ো বলে নয়, আমাদের লোভ আছে বলেই । এইজন্যে ব্রহ্মচর্যের সংযমের দ্বারা বোধশক্তিকে বাধামুক্ত করবার শিক্ষা দেওয়া আবশু্যক । ভোগবিলাসের অাকর্ষণ থেকে অভ্যাসকে মুক্তি দিতে হয়, ষে-সমস্ত সাময়িক উত্তেজনা লোকের চিত্তকে ক্ষুব্ধ এবং বিচারবুদ্ধিকে সামঞ্জস্যভ্রষ্ট করে দেয় তার ধাক্কা থেকে বাচিয়ে বুদ্ধিকে সরল করে বাড়তে দিতে হয় । যেখানে সাধনা চলছে, যেখানে জীবনযাত্রা সরল ও নির্মল, যেখানে সামাজিক সংস্কারের সংকীর্ণতা নেই, যেখানে ব্যক্তিগত ও জাতিগত বিরোধৰুদ্ধিকে দমন করবার চেষ্টা আছে, সেইখানেই ভারতবর্ষ যাকে বিশেষভাবে বিদ্যা বলেছে তাই লাভ করবার স্থান । আমি জানি অনেকেই বলে উঠবেন এ একটা ভাবুকতার উচ্ছ্বাস, কণগুজ্ঞানবিহীনের চুরাশামাত্র। কিন্তু সে অামি কোনোমতেই স্বীকার করতে পারি নে। যা সত্য তা যদি অসাধ্য হয় তবে তা সত্যই নয় । অবশু, যা সকলের চেয়ে শ্রেয় তাই যে সকলের চেয়ে সহজ তা নয় ; সেইজন্যেই তার সাধনা চাই। আসলে, প্রথম শক্ত হচ্ছে সত্যের প্রতি শ্রদ্ধ করা। টাকা জিনিসটার দরকার অাছে এই বিশ্বাস যখন ঠিক