পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তপোবন \3öö》 পেয়েছে। ভারতবর্ষও হঠাৎ মন্তিৰাৱাৰিছোদ আলৰ অনুগত করতে গেলে প্রকৃত যুরোপ হবে না, বিকৃত ভারতবর্ষ হবে মাত্র । ሳ . & এ কথা দৃঢ়ৰূপে মনে রাখতে হবে— এক জাতির সঙ্গে অন্য জাতির অনুকরণ-অমুসরণের সম্বন্ধ নয়, আদান-প্রদানের সম্বন্ধ । আমার যে জিনিসের অভাব নেই তোমারও যদি ঠিক সেই জিনিসটাই থাকে তবে তোমার সঙ্গে আমার আর অদলবদল চলতে পারে না, তা হলে তোমাকে সুমকক্ষভাবে আমার আর প্রয়োজন হয় না। ভারতবর্ষ যদি খাটি ভারতবর্ষ হয়ে না ওঠে তবে পরের বাজারে মজুরি করা ছাড়া পুথিবীতে তার আর-কোনো প্রয়োজনই থাকবে না ; তা হলে তার আপনার প্রতি আপনার সম্মানবোধ চলে যাবে এবং আপনাতে আপনার আনন্দও থাকবে না । তাই আজ আমাদের অবহিত হয়ে বিচার করতে হবে যে, যে সত্যে ভারতবর্ষ আপনাকে আপনি নিশ্চিতভাবে লাভ করতে পারে সে সত্যটি কী। সে সত্য প্রধানত বণিগবৃত্তি নয়, স্বারাজ্য নয়, স্বাদেশিকতা নয় ; সে সত্য বিশ্বজাগতিকতা । সেই সত্য ভারতবর্ষের তপোবনে সাধিত হয়েছে, উপনিষদে উচ্চারিত হয়েছে, গীতায় ব্যাখ্যাত হয়েছে। বুদ্ধদেব সেই সত্যকে পৃথিবীতে সর্বমানবের নিত্যব্যবহারে সফল করে তোলবার জন্যে তপস্যা করেছেন এবং কালক্রমে নানাবিধ দুৰ্গতি ও বিকৃতির মধ্যেও কবীর নানক প্রভৃতি ভারতবর্ষের পরবর্তী মহাপুরুষগণ সেই সত্যকেই প্রচার করে গেছেন। ভারতবর্ষের সত্য হচ্ছে জ্ঞানে অদ্বৈততত্ত্ব, ভাবে বিশ্বমৈত্রী এবং কর্মে যোগসাধনা। ভারতবর্ষের অস্তরের মধ্যে যে উদার তপস্যা গভীরভাবে সঞ্চিত হয়ে রয়েছে সেই তপস্তা আজ হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ এবং ইংরেজকে আপনার মধ্যে এক করে নেবে বলে প্রতীক্ষা করছে— দাসভাবে নয়, জড়ভাবে নয়, সাত্ত্বিকভাবে, সাধক