পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8e 8 . শাস্তিনিকেতন কাজ চলতে থাকে অথচ স্তব্ধতা আসে, ভরা জোয়ারের জলের মতে সমস্ত থমখম করতে থাকে। ডাকাডাকি হাকাহাকি ঘোষণা-রটন এ-সমস্ত একেবারেই ঘুচে যায়। চিন্তায় বাক্যে কর্মে বাড়াবাড়ি কিছুমাত্র থাকে না। শক্তি তখন আপনাকে আপনি আড়াল করে দিয়ে সুন্দর হয়ে ওঠে, যেমন সুন্দর আজকের এই সন্ধ্যাকাশের নক্ষত্রমণ্ডলী | তার প্রচও তেজ, প্রবল গতি, তার ভয়ঙ্কর উদ্যম, কী পরিপূর্ণ শাস্তির ছবি বিস্তার করে কী কমনীয় হাসিই হাসছে ! আমরাও আমাদের কর্মের আসনে পরমশক্তির সেই শান্তিময় মহাসুন্দররাপ দেখে উদ্ধত চেষ্টাকে প্রশাস্ত করব। কর্মের উদগ্র আক্ষেপকে সৌন্দর্যে মণ্ডিত করে আচ্ছন্ন করে দেব। আমাদের কর্ম— মধু ছৌ, মধু নক্তম, মধুমৎ পার্থিবং রজঃ, এই-সমস্তের সঙ্গে মিলে মধুময় হয়ে উঠবে। বর্তমান যুগ আমি পূর্বেই একটি কথা তোমাদিগকে বলেছি— তোমরা যে এই সময়ে জন্মগ্রহণ করতে পেরেছ, এ তোমাদের পক্ষে পরম সৌভাগ্যের বিষয় বলতে হবে। তোমরা জান না এই কাল কত বড়ো কাল, এর অভ্যস্তরে কী প্রচ্ছন্ন আছে। হাজার হাজার শতাব্দীর মধ্যে পৃথিবীতে এমন শতাব্দী খুব অল্পই এসেছে। কেবল আমাদের দেশে মঞ্চ পৃথিবী জুড়ে এক উত্তাল তরঙ্গ উঠেছে। বিশ্বমানবপ্রকৃতির মধ্যে একটা চাঞ্চল্য প্রকাশ পেয়েছে— সবাই আজ জাগ্রত। পুরাতন জীর্ণ সংস্কার ত্যাগ করবার জন্য, সকল-প্রকার অন্যায়কে চূর্ণ করবার জন্য, মানবমাত্রেই উঠে পড়ে লেগেছে— নূতন ভাবে জীবনকে দেশকে গড়ে তুলবে। বসন্ত এলে বৃক্ষ যেমন করে তার দেহ হতে শুষ্ক পত্র ঝেড়ে ফেলে নব গবে জে ও মানুপ্রেতি কোন প্ৰাণঞ্চ মুদ্ৰা টক